আপনি ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।
প্রতি বছরই মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুইটি দিনকে ঈদ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।আমাদের মাঝে বছর ঘুরে রোজার পরে উপস্থিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর ।
আরেকটি দিন হল ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এই ঈদ প্রতিবছর জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে হয়ে থাকে।
এই দুনো দিনে ঈদের নামাজ আদায় করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব। দুই ঈদের মাঝে সময়ের ব্যবধান থাকে।
ফলে মানুষ ঈদের নামাজের নিয়ম ভুলে যায়। তাই আজ আমি ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
যাতে করে খুব সহজেই ঈদের নামাজ সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পান। কোন ধরনের সংশয় না থাকে ।
তাই অবশ্যই আপনাকে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে হবে। তাহলে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
দুই ঈদের নামাজের মধ্যে কোন ধরনের পার্থক্য নেই। অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের নামাজের যে নিয়ম ঠিক তেমনি ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম।
কিভাবে ঈদের নামাজ নামাজ পড়তে হয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।তাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন ।
ছয় তাকবীরে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
ঈদের নামাজ সাধারণ নামাযের নিয়মের মত নয়। ঈদের নামাজের মধ্যে কোন একামত নেই আজান আর নেই।
তবে এখানে অতিরিক্ত ৬ টি তাকবীর আছে। ঈদের নামাজ হলো দুই রাকাত। প্রথমে অন্যান্য নামাজের মতই তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত বাধতে হবে।
তারপর ছানা পাঠ করতে হবে। তারপর তিনটি অতিরিক্ত তাকবীর বলতে হবে।
১ম রাকাতে নামাজের তাকবীর দেওয়ার নিয়ম
প্রথম দুই তাকবীরের মধ্যে হাত তুলে হাত ছেড়ে দেবেন। এক্ষেত্রে হাতবাঁধা যাবে না। এবং তৃতীয় তাকবীর বলে হাত বেঁধে ফেলতে হবে। তারপর অন্যান্য নামাজের মতই আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।
তারপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা মিলাবে। তারপর অন্যান্য নামাজের মতই রুকু সেজদা করে ইমাম সাহেব প্রথম রাকাত শেষ করবেন। তারপর ইমাম সাহেব দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যাবেন।
তারপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা মেলাবেন। এখানেও প্রথম রাকাতের মত অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর দিতে হবে।
২য় রাকাতে তাকবীর দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম
রুকুতে যাওয়ার পূর্বে তিনটি অতিরিক্ত তাকবীর দিতে হবে । প্রতি তাকবীরের শেষে হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে হাতবাঁধা যাবে না। এবং চতুর্থ থাকবে বলে রুকুতে চলে যেতে হবে।
তারপর অন্যান্য নামাজের মতই রুকু সেজদা করে দ্বিতীয় রাকাত শেষ করতে হবে। তারপর শেষ বৈঠক করে সালাম ফিরাবে।
অতপর নামাজ শেষ করে ইমাম সাহেব মেম্বারে উঠে দুইটি খুতবা দিবেন।
এবং দুই খুতবার মাঝখানে ইমাম সাহেব একটু সময় বসবেন জুমার খুতবার মত। প্রথম খুতবার মধ্যে নয়টি তাকবীর থাকবে। এবং দ্বিতীয় খুতবার মাঝে সাতটি তাকবীর থাকবে।
আরো পড়ুন :
- ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি ও উত্তরে কি বলতে হয় ?
- মাশাআল্লাহ অর্থ কি ও কখন বলতে হয় ?
- আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি ও এর উপকারিতা কি ?
মহিলাদের ঈদের নামাজের নিয়ম
মহিলাদের ঈদের নামাজ পুরুষদের মত। তবে এখানে কয়েকটি বিষয় জানতে হবে ।
প্রথম বিষয় : ঈদের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করতে হবে। একাকী আদায় করলে হবে না। এ হিসেবে কোন মহিলা বাড়িতে একাকী ঈদের নামায আদায় করতে চাইলে তার নামায আদায় হবে না।
দ্বিতীয় বিষয় : ঈদের নামাজে নারীদেরকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অংশগ্রহণ করা সম্পর্কে অনুমতি দেননি বরং তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে তা ওয়াজিব হিসেবে নয় বরং তাগিদ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
আমাদের দেশের ঈদগাহ গুলোতে নারীদের অংশগ্রহণের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা করা হয়না। এক্ষেত্রে বেপর্দা ও ফেতনার আশংকা বেশি।
এই কারণে নারীদের ঈদগাহে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোনো সুযোগ নেই। যদি অংশগ্রহণ করতেই হয় তাহলে পর্দার ব্যবস্থা করতে হবে।
যদি কোন মহিলা ঈদগাহের জামাতে অংশগ্রহণ করতে চায় তাহলে পূর্ণ পর্দার সাথে ফেতনামুক্ত হয়ে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক বিষয় বুঝে ঠিক মতো ঈদের নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।
পরিশেষে বলব : উপরে উল্লেখিত ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে যা আলোচনা করা হলো যদি এ গুলো ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
FAQ
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম ও ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম এর মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কিনা ?
এই দুই ঈদের নামাজের মধ্যে কোন ধরনের পার্থক্য নেই।
অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের নামাজের যে নিয়ম ঠিক তেমনি ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম।