২০২৪ সালে চকলেট ব্যবসার আইডিয়া , ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ।

আপনি কি চকলেট ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এ আর্টিকেলটা আপনার জন্য।

বর্তমান সময়ে ছেলে- মেয়ে, ছোট- বড় সকলের কাছে প্রিয় একটি নাম হলো চকলেট। চকলেট খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

বর্তমান বাজারে জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে অন্যতম একটি খাবার হলো চকলেট। চকলেটের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

বিশ্বব্যাপী চকলেট বাজারের ধরণ ২০২২ সালে ছিল usd ১৩৩.৩৮ বিলিয়ন। আর বর্তমান বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন যা ২০৩১ সালে ১৮১.৭৮ বিলিয়নে পৌঁছাতে পারে।

সুতরাং অতি জনপ্রিয় এই অল্প পুঁজির চকলেট ব্যবসা করে আপনিও জীবন যুদ্ধে সফল হতে পারবেন।

তাই আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে চকলেট ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

পাশাপাশি চকলেট ব্যবসার জন্য কি কি বিষয়ের প্রতি বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো আলোচনা করব।

যাতে করে আপনি খুব সহজেই চকলেট ব্যবসা করতে পারেন। সুতরাং শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে আপনাকে আর্টিকেলটি পড়তে হবে।

চকলেট ব্যবসার আইডিয়া

Table of Contents :-

চকলেট ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪

চকলেট ব্যবসা করে সফলতা অর্জনের জন্য আমি আপনাকে কিছু গাইডলাইন দিবো। সুতরাং ব্যবসায় লাভবান হওয়ার জন্য এই গাইডলাইনগুলো অনুসরণ করতে হবে।

চকলেট ব্যবসার জন্য যে সব বিষয়ে জানা প্রয়োজন।

  1. পূর্ব পরিকল্পনা ।
  2. মুলধন ।
  3. বর্তমান বাজার অনুযায়ী চকলেট ব্যবসার প্রকারভেদ ।
  4. স্থান নির্বাচন করা ।
  5. চাহিদা অনুযায়ী পণ্য নির্বাচন করা ।
  6. মূল্য নির্ধারণ করা ।
  7. মার্কেটিং করা ।
  8. চকলেটের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু লক্ষনীয় বিষয় ।
  9. জনপ্রিয় কিছু চকলেটের নাম ও আনুমানিক মূল্য ।

এতক্ষণ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম । এখন চকলেট ব্যবসার আইডিয়া বিস্তারিত আলোচনা করব ।

১, পূর্ব পরিকল্পনা ।

যে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে হুটহাট করে শুরু করলে সেই ব্যবসা দীর্ঘ মেয়াদি হয় না। ব্যবসায় সফলতা অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ব্যবসা শুরু করার আগে পূর্ব পরিকল্পনা করতে হবে।

আর সেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। যেমন- আপনি যদি চকলেট ব্যবসা করতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমে চকলেট সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে।

বর্তমান বাজারে বিভিন্ন ধরনের চকলেট পাওয়া যায়। আপনাকে সেগুলোর দরদাম সম্পর্কে ভালোভাবে গবেষণা করতে হবে।

এবং চকলেটের বাজারিকরণ সম্পর্কে আইডিয়া রাখতে হবে। আপনার চকলেট ব্যবসার লক্ষবস্তু ঠিক করতে হবে।

মোটকথা আপনাকে ব্যবসা শুরু করার আগে পরিপূর্ণ ব্যবসার একটা ছক তৈরি করতে হবে। তারপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে সফলতা নিশ্চিত।

আরো পড়ুন : বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার ১৬টি আইডিয়া ২০২৪

২, মুলধন ।

বর্তমান সময়ে পৃথিবীতে টাকা ছাড়া কোন কিছুই উপার্জন করা যায় না। আর ব্যবসা করতে হলে তো মুলধনের অবশ্যই প্রয়োজন।

যে কোন ব্যবসার লাভের পরিমাণ নির্ভর করে ব্যবসার মুলধনের উপর। আর চকলেট ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি কিভাবে চকলেটের ব্যবসা করবেন, সেই অনুযায়ী আপনাকে মুলধন যোগাড় করতে হবে।

এক্ষেত্রে যদি আপনার কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে মূলধন থাকে তাহলে তো ভালো। আর যদি ব্যবসার মুলধনের বাড়তি প্রয়োজন হয় , তাহলে আপনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিজনেস লোন উঠাতে পারবেন। 

৩, বর্তমান বাজার অনুযায়ী চকলেট ব্যবসার প্রকারভেদ ।

চকলেট একটি জনপ্রিয় খাবার। সুতরাং চকলেটের চাহিও অনেক বেশি। এজন্য বর্তমান সময়ে অনেকে বিভিন্ন ভাবে চকলেট ব্যবসা করেন। আমরা নিচে চকলেট ব্যবসার প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

  • (ক), চকলেট উৎপাদন
  • (খ) চকলেট আমদানি ও রপ্তানি 
  • (গ) খুচরা চকলেট ব্যবসা
  • (ঘ) চকলেট ক্যাফে বা রেস্তোরাঁ 

 (ক) চকলেট উৎপাদন ।

চকলেট উৎপাদনের ব্যবসা যদিও একটু ব্যয়বহুল ব্যবসা । অর্থাৎ, এই ব্যবসা করতে হলে আপনাকে পরিমাণে একটু বেশি মুলধনের প্রয়োজন।

তবে, ব্যয়বহুল ব্যবসা হলেও চকলেট উৎপাদনের ব্যবসায় লাভ অনেকে বেশি। আপনি যদি চকলেট উৎপাদনের ব্যবসা করতে চান, তাহলে আপনাকে চকলেট উৎপাদনের সরঞ্জাম যোগাড় করতে হবে।

(খ) চকলেট আমদানি ও রপ্তানি ।

চকলেটের আমদানি বলতে বুঝায় যে, আপনি বিভিন্ন দেশ থেকে ভালো ভালো চকলেট এবং উন্নত নিউ মডেলের চকলেট গুলো ক্রয় করে বাংলাদেশ এনে ব্যবসা করবেন।

আর চকলেট রপ্তানি বলতে বুঝায় যে, আপনি নিজের দেশের ভালো ও উন্নতমানের চকলেট গুলো বহির্বিশ্বে পৌঁছানোর মাধ্যমে ব্যবসা করবেন।

বর্তমান সময়ে চকলেটের এই আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসা প্রচুর লাভজনক একটি ব্যবসা। 

(গ) খুচরা চকলেট ব্যবসা ।

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ হলো মধ্যবিত্ত । সুতরাং একসাথে অনেকগুলো দামি চকলেট প্যাকেট ক্রয় করা তাদের জন্য সম্ভব নয়।

এজন্য তারা খুচরা চকলেট ক্রয় করে চায়। তাই আপনি এই খুচরা চকলেট ব্যবসা করতে পারেন। এই ব্যবসা করতে হলে আপনাকে মুলধন নিয়ে চিন্তা করা লাগবে না।

অল্প পুঁজির মধ্যে খুচরা চকলেট ব্যবসা অনেক লাভজনক একটি ব্যবসা। এবং বাজারে খুচরা চকলেট ব্যবসার চাহিও অনেক বেশি রয়েছে।

(ঘ) চকলেট ক্যাফে বা রেস্তোরাঁ ।

উন্নতির এই যুগে মানুষ সব দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে। আমাদের দেশের মানুষ বহির্বিশ্বের খাবার বেশি পছন্দ করে।

এজন্য বিদেশীদের মতো বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে ও চকলেট দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার ও পানীয় খেতে পছন্দ করে। সুতরাং চকলেট ক্যাফে বা রেস্তোরাঁর চাহিদা বর্তমানে অনেক বেশি। 

৪, স্থান নির্বাচন 

প্রথমত আপনার ব্যবসায়ের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান খুঁজে বের করা খুব গুরুত্বপূর্ন। চকলেট ব্যবসার দোকান এমন জায়গায় দিতে হবে , যার আশেপাশের মানুষ চকলেট খেতে পছন্দ করেন।

এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন স্কুল , কলেজ, ভার্সিটির সামনে দিতে পারেন। অথবা বিভিন্ন খেলার মাঠ ও পার্কের সামনে দিতে পারেন।

৫, চাহিদা অনুযায়ী পণ্য নির্বাচন করা ।

 আপনার কাস্টমারদের  চাহিদা বুঝে সেই অনুযায়ী পণ্য নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের চকলেট, চকলেট পণ্য এবং চকলেট দিয়ে তৈরি খাবার এবং পানীয় রাখতে  পারেন।

 ৬, মূল্য নির্ধারণ করা ।

আপনার পণ্যের জন্য বাজার মূল্য নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পণের মান অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা। তবে, এক্ষেত্রে খুব সতর্কতা অবলম্বন করা।

৭, মার্কেটিং করা ।

আপনার চকলেট দোকানের প্রচার প্রসার করা দরকার। বেশি প্রচার হলে কাস্টমার  বাড়বে। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অথবা ম্যাগাজিনে এড দিতে পারেন।

৮, চকলেটের মূল্য নির্ধারণে ক্ষেত্রে লক্ষনীয় কিছু বিষয় । 

সাধারণত সব ধরণের চকলেটের মূল্য এক হয় না। দেশের ভিন্নতার কারণে চকলেটের মূল্য হ্রাস বা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এবং উপাদানের ভিন্নতার কারণেও চকলেটের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। এজন্য 

চকলেটের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে লক্ষনীয় কিছু বিষয় আমরা নিচে উল্লেখ করলাম।

  • (ক) চকলেটের ধরন
  • (খ) চকলেট টের আকার
  • (গ) চকলেটের উপাদান
  • (ঘ) চকলেটের উৎস

(ক)  চকলেটের ধরন ।

মিল্ক চকলেট, ডার্ক চকলেট, এবং ওয়াইট চকলেটের দাম সাধারণত বিভিন্ন রকম হয়। চকলেটের মধ্যে মিল্ক চকলেট সবচেয়ে সস্তা, তারপর ওয়াইট চকলেট, এবং ডার্ক চকলেট সবচেয়ে দামি।

(খ) চকলেটের আকার ।

ছোট চকলেট বারের দাম সাধারণত বড় চকলেট বারের চেয়ে কম হয়ে থাকে।

(গ) চকলেটের উপাদান ।

চকলেটে বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হয়, যেমন বাদাম, ফল, বা মশলা। সুতরাং এই উপাদানগুলোর দাম ও চকলেটের দামের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

(ঘ) চকলেটের উৎস ।

চকলেট বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হয়, এবং বিভিন্ন দেশের চকলেটের দাম ভিন্ন হতে পারে।

৯, জনপ্রিয় কিছু চকলেটের নাম ও দাম ।

আমাদের দেশে ছোট-বড় প্রায় সকলেই চকলেট খেতে পছন্দ করে। এজন্য আমরা আপনাকে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু চকলেটের নাম ও তার আনুমানিক মূল্য দিয়ে দিচ্ছি।

চকলেটের নামআনুমানিক মূল্য
মিল্ক চকলেট৫০-১০০ টাকা
ডার্ক চকলেট ১০০-২০০ টাকা
ওয়াইট চকলেট৫০-১০০ টাকা
আলফাজো২০-৩০ টাকা
ওরিও ২০-৩০ টাকা
কিটক্যাট২০-৩০ টাকা
স্ট্রবেরি চকলেট৫০-১০০ টাকা
মিল্ক চকলেট কেক২০০-৩০০ টাকা
ডার্ক চকলেট কেক৩০০-৪০০ টাকা
চকোলেট আইসক্রিম২০-৩০ টাকা
চকোলেট পিষ্ট্রি২০-৩০ টাকা
চকোলেট কেন্ডি৫-১০ টাকা
চকোলেট টফি১০-২০ টাকা
চকোলেট ডেজার্ট২০-৩০ টাকা
চকলেট আইসক্রিম ২০-৩০ টাকা
চকোলেট ড্রিংক২০-৩০ টাকা
চকোলেট বার১০০-২০০ টাকা
চকোলেট ফ্লেভারড ড্রিংকস২০-৩০ টাকা
চকোলেট মফিন২০-৩০ টাকা
চকোলেট কুকি ১০-২০ টাকা
চকোলেট বাটার১০০-২০০ টাকা
চকোলেট ট্রিট১০-২০ টাকা
চকোলেট সস১০০-২০০ টাকা

উপসংহার

উপরে চকলেট ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করলাম । চকলেট ব্যবসা খুব লাভজনক একটা ব্যবসা।

সুতরাং আপনি যদি উপরোক্ত কথাগুলো মাথায় রেখে চকলেট ব্যবসা শুরু করেন। তাহলে আপনি লাভবান হতে পারবেন।

আশাকরি আপনি অনেক উপকার পেয়েছেন । লেখা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

FAQ

চকলেট খাওয়ার উপকারিতা কি ?

চকলেট খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। চকলেট খাওয়ার উল্লেখযোগ্য উপকার হলো শরীরের ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়।

এই কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক বিভিন্ন রোগবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও চকলেট অনেক সহায়তা করে।

এসব কারণে চকলেটের চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে যাচ্ছে। তাই দেরি না করে আজই এই চমৎকার ব্যবসাটি শুরু করে দিন।

ঘরে তৈরি চকলেট ব্যবসা কি লাভজনক ?

হ্যাঁ অবশ্যই ঘরে তৈরি চকলেট ব্যবসায় অনেক লাভজন। আপনি যদি পুজি কম থাকে তাহলে আপনি ঘরে বসে চকলেট তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম হবে। আর যদি আপনার পুঁজি বেশি থাকে তাহলে বড় পরিসরে চকলেট তৈরি করতে পারে। এ ক্ষেত্রে লাভ বেশি হবে ।

চকলেট তৈরি করতে কি কি লাগে ?

চকলেট তৈরি করতে অনেক কিছুই লাগে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জিনিস হল।
১. গুঁড়ো দুধ ।
২. কেকো পাউডার ।
৩. চিনি ।
৫. ময়দা ।
৬. ভ্যানিলা এসেন্স ।
৭. মাখন ইত্যাদি ।

চকলেট ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে ?

আপনি যদি ছোট আকারে চকলেট ব্যবসা করতে চান তাহলে এক্ষেত্রে এক থেকে দুই লাখ টাকা দিয়ে শুরু করতে পারবেন।

আর যদি আপনার বড় আকারে শুরু করার ইচ্ছা থাকে তাহলে এক্ষেত্রে পুজি অনেক বেশি লাগবে। এক্ষেত্রে মোটামুটি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে শুরু করতে পারবেন।

আমি সবসময় নতুন জিনিস শিখতে এবং ছড়িয়ে দিতে পছন্দ করি। তাই সকল ধরনের বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কিত নতুন বিষয় তুলে ধরাই আমার মূল লক্ষ্য।

Leave a Comment