আপনি কি জমি ক্রয় করার নিয়ম সম্পর্কে কোন তথ্য খুঁজতেছেন ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য ।
জমি ক্রয় করার উদ্যোগ একটি বুদ্ধি ভিত্তিক আর্থিক সিদ্ধান্ত। বর্তমান সময়ে জমি ক্রয় করা অথবা জমি ক্রয়-বিক্রয় করার ব্যবসা করা অত্যন্ত লাভজনক।
কেননা আমাদের দেশে যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই জমির মূল্য উপরের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে বর্তমান সময়ে জমি ক্রয় করাটা অনেক টাফ বিষয়।
অর্থাৎ অনেকে ভুয়া জমির কাগজপত্র দিয়ে আপনার থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে।
এজন্য আজ আমি জমি ক্রয় করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
যাতে করে আপনি কোন প্রবলেমের মুখামুখি না হন। এ জন্য সমস্ত আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে ।
জমি ক্রয় করার নিয়ম ২০২৫
জমি ক্রয় করার পূর্বে আপনাকে নির্দিষ্ট জমির তথ্য সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
১, জমির খতিয়ান ও নকশা:
বর্তমান সমাজে এক জমি বারবার বিক্রি করা হয়। আবার একজনের জমি অন্যজন বিক্রি করে দুই নাম্বারি কাগজ ধরিয়ে দেয়।
এজন্য জমির সঠিক সীমানা আকার আকৃতি এবং জমির সঠিক মালিক সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য আপনাকে জমির খতিয়ান ও নকশা ভালোভাবে যাচাই করতে হবে।
২, সিএস, এসএ, আরএস, বিএস, পর্চা:
প্রত্যেকটা জমির প্রয়োজনীয় কিছু পর্চা থাকে। এজন্য আপনাকে জমি ক্রয় করার পূর্বে প্রত্যেকটা পর্চা ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
সিএস, এসএ, আরএস,বিএস, এসব পর্চাগুলো জমির এক এক আকার ধারণ করে। যেমন – সিএস পর্চায় জমির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তথ্য থাকে।
এসএ পর্চায় জমির আয়কর সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়। আরএস পর্চায় জমির রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। এজন্য প্রত্যেকটা পর্চাকে আপনাকে খুব ভালোভাবে দেখে শুনে বুঝতে হবে।
৩, ক্রয় দলিল বা ভায়া দলিল:
আপনি জাতিকে জমি ক্রয় করবে সে যদি পূর্বে অন্য কারোর থেকে জমি ক্রয় করে থাকে তাহলে তার থেকে জমির ক্রয় দলিল অথবা ভায়া দলিল দেখে নিতে হবে।
৪, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া দলিল:
আপনার বিক্রেতা যদি তার উত্তরাধিকার সূত্রে নির্দিষ্ট জমির মালিক হয়ে থাকে তাহলেও তার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রের প্রাপ্তির দলিল দেখে নিতে হবে।
৫, জমির দাগ নম্বর:
সাধারণত একটি জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর ও দাগ নম্বর এসব তথ্যগুলো আপনাকে অন্য জমি থেকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে।
৬, জমির মোট পরিমাণ:
আপনি যে জমিটি ক্রয় করবেন তা দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং সর্বমোট পরিমাণ সম্পর্কে আপনাকে বিস্তারিত জানতে হবে।
৭, জমি খাস অথবা সরকারি কিনা:
বর্তমান সময়ে জমি সংক্রান্ত অনেকেই ধোকার শিকার হয়। এজন্য আপনাকে জমি ক্রয় করার পূর্বে জানতে হবে যে জমিটি খাস অথবা সরকারি কিনা।
কেননা খাস এবং সরকারি জমি বিক্রয় করা বেআইনি। সুতরাং আপনি ক্রয় করলেও এ সমস্ত জমির মালিক হতে পারবেন না।
৮, জমির উপরে মামলা মোকাদ্দামা আছে কিনা:
জমি ক্রয় করার সময় খুব ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে হবে যে নির্দিষ্ট জমির উপর কোন মামলা-মোকদ্দমা আছে কিনা।
অর্থাৎ যদি জমির উপর কোন মামলা-মোকদ্দমা চলে তাহলে আপনি জমি ক্রয় করার পরে আপনাকে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হবে।
৯, কোন ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আছে কিনা:
অনেক সময় মানুষ কোন ব্যাংকের থেকে বড় আঙ্কেল ঋণ নিতে হলে অথবা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের থেকেও বেশি পরিমাণে ঋণ নিতে হলে তাকে জমির দলিলকে জামানত হিসেবে রাখতে হয়। এজন্য আপনাকে এসব বিষয় খোঁজখবর নিতে হবে।
জমি করায় করার পর আপনার জন্য বিশেষ করণীয় কিছু বিষয় রয়েছে:
- রেজিস্ট্রেশন: আপনাকে খুব ভালোভাবে জমির রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। কোন দালালের চক্রান্তে না পড়ে সরাসরি রেজিস্ট্রেশন অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
- মিউটেশন: রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনাকে মিউটেশন অর্থাৎ নামজারি করতে হবে।
- কর পরিশোধ: নিয়মিত আপনাকে জমির কর্মপরিশোধ করতে হবে।
- সীমানা নির্ধারণ: আপনার জমি রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনার সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
উপরোক্ত বিষয়গুলো জানা শোনার পর ও আপনাকে একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিতে হবে। কেননা জমি ক্রয় করা এবং রেজিস্ট্রেশন করা অত্যন্ত জটিল একটি বিষয়।
আরো পড়ুন :
পরিশেষে বলবো :
উপরে জমি ক্রয় করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যদি বিষয়গুলো আপনি ফলো করেন তাহলে খুব সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
যদি লেখাটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।