আপনি কি জানতে চান শাড়ির পাইকারি মার্কেট কোন কোন জায়গায় আছে ? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মহিলারাই শাড়ি পরতে পছন্দ করে। তাই বাংলাদেশে শাড়ির চাহিদা অনেক বেশি। শাড়ির ব্যবসায় প্রচুর লাভ রয়েছে যদি আপনি সব দিকে লক্ষ করে শাড়ির ব্যবসা করেন।
অর্থাৎ শাড়ি হাই কোয়ালিটি হওয়ার সাথে সাথে কম দামে ক্রয় করতে হবে তাহলেই আপনি বেশি লাভবান হতে পারবেন শাড়ির ব্যবসা করে।
এর জন্য অবশ্যই আপনাকে পাইকারি বাজার থেকে শাড়ি ক্রয় করতে হবে কিন্তু অনেকেই জানেনা পাইকারি বাজার কোথায় রয়েছে ?
আজ আমি শাড়ির পাইকারি মার্কেট কোন কোন জায়গায় রয়েছে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
শাড়ির পাইকারি মার্কেট ও কম দামে শাড়ি কোথায় পাওয়া যায় ?
এখানে ১২টি স্থান বলব যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই পাইকারি হিসেবে শাড়ি কিনতে পাড়বেন ।
১/ জামদানি শাড়ির পাইকারি বাজার হলো গাউছিয়া
গাউছিয়া হল পাইকারি মার্কেট এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে নামকরা , এখানে প্রতি মঙ্গলবার সারা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা কাপড় ক্রয় করতে আসে।
এক জরিপ অনুযায়ী দেখা গিয়েছে এদিনই আনুমানিক 40 কোটি টাকা লেনদেন হয়।গাওছিয়ার মধ্যে প্রায় সাত হাজারের উপরে কাপড়ের দোকান রয়েছে ।
এই মার্কেটে নানান জিনিস পাইকারি বিক্রি করা হয় খুব কম দামে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় শাড়ি।
এখানে সব ধরনের শাড়ি পাওয়া যায় । জামদানি শাড়ি পাওয়া যায় অনেক । এই হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে শাড়ির পাইকারি মার্কেট হলো গাউছিয়া।
গাউছিয়া মার্কেটের অবস্থান হল ঢাকা থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার পূর্বদিকে। ভুলতা নামক এলাকায় অবস্থিত।
২/ ইসলামপুর
ইসলামপুর হলো ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে নামকরা পাইকারি মার্কেট। ইসলামপুর এর আরেকটি নাম রয়েছে সেটা হল পুরান ঢাকা।
এই মার্কেট হলো অনেক পুরাতন। এই জায়গায় নানান ধরনের কাপড় বিক্রি করা হয়। তবে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হলো শাড়ি বিক্রয় এর ক্ষেত্রে।
শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন খোলা থাকে। প্রতিদিনই হাজার হাজার লোক দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই মার্কেটে কাপড় ক্রয় করতে আসে পাইকারি হিসেবে।
এই মার্কেটে প্রায় ১১০০ টি কাপড়ের দোকান রয়েছে। অতএব আপনি এখান থেকে খুব অল্প দামে পাইকারি হিসেবে শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন।
৩/ নিউ মার্কেট
এখানেও প্রচুর শাড়ি পাবেন। হরেক ডিজাইনের শাড়ি পাবেন খুব কম মূল্যে। তবে এখানে পাইকারি বিক্রি করা হয় আবার খুচরা বিক্রি করা হয়।
৪/ মিরপুর বেনারসি পল্লী
ঢাকার মধ্যে আরেকটি সবচেয়ে বড় শাড়ির পাইকারি মার্কেট মূল্য মিরপুর বেনারসি পল্লী। এখানে প্রায় 110 টি শাড়ির দোকান রয়েছে। এখানে বেনারসি শাড়ি সহ নানান ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়।
কিছু শাড়ির নাম দেওয়া হল
- বেনারসি শাড়ি
- মসলিন শাড়ি
- জামদানি শাড়ি
- কাতান শাড়ি
- জর্জেট শাড়ি
- সিল্কের শাড়ি
ইত্যাদি এরকম আরো অনেক ধরনের শাড়ি রয়েছে।
এই জায়গা থেকে আপনি খুব অল্প দামে পাইকারি হিসেবে শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন।
৫/ গুলিস্থান
এটা ঢাকার মধ্যে নামকরা একটি স্থান। এখানে হরেক রকমের জিনিস পাওয়া যায়। বিশেষ করে নানান ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়।
এই জায়গায় পাইকারি এবং খুচরা উভয় সিস্টেমেই ক্রয় বিক্রয় করা হয়। তবে আপনি এখান থেকে পাইকারি ক্রয় করা ক্ষেত্রে খুব অল্প মূল্যে কিনতে পারবেন।
গুলিস্তান থেকে কিনার সময় অবশ্যই সতর্কতার সাথে যাচাই-বাছাই করে শাড়ি ক্রয় করবেন।
৬/ শাড়ির পাইকারি মার্কেট বাবুরহাট
বাবুরহাট পাইকারি শাড়ির ক্ষেত্রে অনেক নামকরা একটি মার্কেট। এই জায়গায় পুরা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্রেতারা শাড়ি ক্রয় করার জন্য যায়।
এখানে দুই দিন হাট বসে। ১/ শুক্রবার ২/ শনিবার। আর বাবুরহাট মূলত নরসিংদীতে। অর্থাৎ নরসিংদী থেকে প্রায় 12 কিলোমিটার দক্ষিনে এই হাট অবস্থিত।
এই জায়গায় কাতান শাড়ি , জর্জেট শাড়ি থেকে শুরু করে নানান ধরনের দেশি-বিদেশি হাই কোয়ালিটি শাড়ি খুব অল্প দামে পাওয়া যায়।
৭/ ডেমরার জামদানি হাট
ঢাকা শহরের আরেকটি নামকরা পাইকারি মার্কেট হলো ডেমরার জামদানি হাট। এখানেও নানান ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়।
এই জায়গায় শুধু শুক্রবারে হাট বসে। এই হাটটা প্রায় আনুমানিক 300 ধরে হচ্ছে। এখানে আপনি অল্প দামে অনেক চমৎকার চমৎকার শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন।
৮/ টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি বাজার
টাঙ্গাইলও পাইকারি মার্কেট হিসেবে অনেক নামকরা। এখানেও নানান ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়। তবে এখানে তাঁতের শাড়ি বিখ্যাত।
এই হিসেবে টাংগাইলকে বলা হয় তাঁতের শাড়ির রাজধানী। আর মার্কেটটি অবস্থিত পাথরাইল নামক স্থানে। এটা টাঙ্গাইল থেকে প্রায় 6 কিলোমিটার দক্ষিনে ।
এই জায়গায় বাংলাদেশের সব জায়গা থেকে বিভিন্ন শাড়ি ক্রয় করার জন্য আসে। এখানে খুব অল্প দামে পাইকারি মূল্যে শাড়ি ক্রয় করা যায়।
৯/ তাঁতের শাড়ির মার্কেট হলো সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে নানান ধরনের কাপড় পাওয়া যায়। বিশেষ করে হরেক রকমের হাই কোয়ালিটি শাড়ি পাওয়া যায়। এখানেও তাঁতের শাড়ি পাওয়া যায়।
এখানে পুরো বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্রেতারা শাড়ি ক্রয় করতে আসে আর এই জায়গায় রবিবার এবং সোমবার হাট বসে। আর এই হাটটি মূলত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত।
এই জায়গা থেকে খুব অল্প দামে শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন যেগুলো মানের দিক দিয়ে হাই কোয়ালিটি।
১০/ সিলেটের মনিপুরে পাইকারি মার্কেট
এখানেও নানান ধরনের শাড়ি পাওয়া যায় পাইকারি হিসেবে। দেশে নানান স্থান থেকে ক্রেতারা ক্রয় করতে আসে এই মার্কেটে।
১১/ রাজশাহী সিল্ক শাড়ির পাইকারি বাজার
এখানেও নানান ধরনের শাড়ি পাওয়া যায় , এখানে সিল্কের শাড়ি বিখ্যাত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকেরা শাড়ি ক্রয় করার জন্য এই জায়গায় ভিড় জমায়।
অতএব আপনি এখান থেকে খুব কম দামে হাই কোয়ালিটি শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন।
১২/ মানিকগঞ্জ
ঢাকার পাশেই মানিকগঞ্জ জেলায় ঢাকার মতোই নানান ধরনের পাইকারি কাপড় পাওয়া যায়। বিশেষ করে এখানে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়।
যেগুলো মানে দিক দিয়ে অনেক উন্নত। এই জায়গা থেকে আপনি খুব অল্প দামে পাইকারি হিসেবে শাড়ি ক্রয় করতে পারবেন।
পরিশেষে বলব : উপরে উল্লেখিত শাড়ির পাইকারি মার্কেট সম্পর্কে যে আলোচনা করলাম। যদি গুলো ভালো লেগে থাকে এবং আপনার কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে জানাবেন এবং শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন :- ২০২৪ সালে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার ১৭টি উপায়
FAQ
তাঁতের শাড়ি কোথায় পাওয়া যায় ?
তাঁতের শাড়ি পাওয়া যায় অনেক জায়গায় পাওয়া যায় । নামকরা কয়েকটি নাম বলছি ।
১. টাঙ্গাইল
২.সিরাজগঞ্জ
৩.গাউছিয়া
সিল্কের শাড়ি কোথায় পাওয়া যায় ?
১. রাজশাহী সিল্কের শাড়ির জন্য বিখ্যাত ।
২. মিরপুর বেনারসি পল্লীতেও সিল্কের শাড়ি পাওয়া যায় ।
জামদানি শাড়ি কোথায় পাওয়া যায় ?
গাউছিয়ায় জামদানি শাড়ি পাওয়া যায় ।
গাউছিয়া মার্কেটে কি কি পাওয়া যায় ?
সব ধরনের শাড়ি পাওয়া যায় । যেমন :
১/ বেনারসি শাড়ি
২/ তাঁতের শাড়ি
৩/ মসলিন শাড়ি
৪/ জামদানি শাড়ি
৫/ কাতান শাড়ি
৬/ জর্জেট শাড়ি
৭/ সিল্কের শাড়ি