আপনি কি ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।
ক্রিপ্টোকারেন্সি হল ভার্চুয়াল কারেন্সি। ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার ক্রমেই বেড়ে চলছে ।ভবিষ্যতে এর চাহিদা দ্বিগুন বেড়ে যাবে।
কেননা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লাভ অনেক বেশি। যার ফলে বর্তমানে মানুষ টাকা উপার্জনের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন।
সমস্ত বিশ্বেই ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ বেড়েই চলছে। বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে।
গত পাঁচ থেকে দশ বছরে যারাই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করেছেন তারাই সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছে।
অতএব আপনিও এই ব্যবসা করে অনেক লাভবান হতে পারেন। তাই আজ আমি ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা কি ? এখানে কিভাবে বিনিয়োগ করবেন এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
যাতে করে আপনি কোন ধরনের প্রবলেম ফেস করা ছাড়াই এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত নানান প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন ।
তাই অবশ্যই সমস্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৪
এই ব্যবসা করার জন্য অবশ্যই আপনাকে কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কেননা ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজার উঠানামা করে।
যার ফলে বিনিয়োগকারীদের অনেকেই ক্ষতির মুখে পড়ে। তবে এমন কিছু নির্দিষ্ট কৌশল রয়েছে যেগুলো প্রয়োগ করলে ক্ষতি থেকে বাঁচা যাবে।
ব্যবসা করার নিয়ম বলার আগে কৌশল নিয়ে আলোচনা করব। যাতে করে আপনি খুব সহজেই এই ব্যবসায় সফলতা লাভ করতে পারেন।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায় ৩টি কৌশল অবলম্বন করা
- ১. দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগ করা। কেননা এই কারেন্সি গুলো দাম অনেক সময় বেড়ে যায় আবার অনেক সময় অনেক কমে যায়। যার ফলে কম সময়ের জন্য বিনিয়োগ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক বেশি। আর দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বিনিয়োগ করলে লাভ অনেক বেশি হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
- ২. আপনাকে অবশ্যই লেনদেনের কৌশল সম্পর্কে অবগত হতে হবে। নিজের মাঝে মার্কেট যাচাই-বাছাই করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। কখন মূল্য বৃদ্ধি পাবে আবার কখন মূল্য কমে যাবে আগাম বুঝতে হবে। এরপর এই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে লেনদেন করতে হবে। তাহলেই আপনি লাভবান হতে পারবেন। মোট কথা আপনাকে প্রযুক্তি দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আপনি অনেক লাভবান হতে পারবেন।
- ৩. নির্ভরযোগ্য এক্সচেঞ্জ খুঁজে বের করা। যারা বিনিয়োগকারীকে তার পছন্দ অনুযায়ী কয়েন ট্রেড করার অনেক সুবিধা দিবেন। পাশাপাশি ব্যবসা করার নানান সুবিধা দেবে। কেননা বর্তমান সময়ে ধোঁকাবাজি অনেক বেশি হয়। তাই অবশ্যই আপনাকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
এই কৌশলগুলো অবলম্বন করে আপনাকে ব্যবসা শুরু করতে হবে।
কোন ক্রিপ্টোকারেন্সি উপর ব্যবসা বা বিনিয়োগ করবেন ?
বর্তমানে মার্কেটে অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সি এসেছে। আমি কয়েকটি প্রসিদ্ধ কারেন্সির নাম বলে দিচ্ছি।
- বিটকয়েন। এই কারেন্সি টা সম্পূর্ণ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি কারেন্স। এই কারেন্সি দিয়ে কোটি কোটি মানুষ ব্যবসা করে থাকেন। মাঝে মাঝে এর দাম অনেক বেড়ে যায়। যেমন একবার ৬৯ হাজার মার্কিন ডলারের পৌঁছে গিয়েছিল। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই কারেন্সির ভ্যালু কত।
- ইথেরিয়াম । বিটকয়েনের পরে এই কারেন্সি অনেক নাম করা। এই কারেন্সি অনেক ব্যবহার হয়। কেননা এর ভ্যালু রয়েছে অনেক।
- ইউএসডি কয়েন । এই কয়েনটি অনেক জনপ্রিয়। ক্রিপ্টোকারেন্সিকে স্থিতিশীল করার জন্য সবাই এই কয়েনটি ব্যবহার করে থাকেন।
- dogecoin এই কারেন্সিটি বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় একটি কারেন্সি।
- বিনান্স কয়েন । এটি হলো পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ হিসেবে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তৃতীয় জনপ্রিয় ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে এটাকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- লাইটকয়েন। এই কয়েনটি অনেক জনপ্রিয়।এই কারেন্সি অনেক ব্যবহার হয়। কেননা এর ভ্যালু রয়েছে অনেক।
মোটামুটি এই কারেন্সি গুলো অনেক জনপ্রিয়। এই সমস্ত কারেন্সি গুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই কেনাকাটা ও বিনিয়োগ করতে পারেন।
আরো পড়ুন : বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার ১৬টি আইডিয়া ২০২৪
বিস্তারিতভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ব্যবসা করার নিয়ম
অনেকভাবে ব্যবসা করা যায়। আমি কয়েকটি ব্যবসা করার মাধ্যম বলে দিচ্ছি। এই সমস্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি খুব সহজেই ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন।
১. ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে ব্যবসা ।
বিনিয়োগ বলতে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ট্রেডিং করা। এটা সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। আপনি দুই ভাবে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
- অল্প সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে পারবেন। অর্থাৎ কোন ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয় করে ১০ বা ১৫ মিনিট পর আবার বিক্রি করা। এটাকে বলা হয় অল্প সময়ে বিনিয়োগ করা।
- আবার আপনি ইচ্ছে করলে দীর্ঘ মিয়াদের জন্য বিনিয়োগ করতে পারেন। অর্থাৎ এক বছর অথবা তার থেকে বেশি সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে লাভবান বেশি হতে পারবেন।
বিনিয়োগ করার জন্য আপনাকে ৩টি ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে।
- নির্ভরযোগ্য এক্সচেঞ্জ খুঁজে বের করতে হবে। যারা আপনাকে আপনার পছন্দমত কয়েন ট্রেড করার সুবিধা দিবে।
- একাউন্টে টাকা জমা করতে হবে। বিশেষ করে সহজে লেনদেন করা যায় এমন একটি পদ্ধতি অনুসরণ করবেন।
- এরপর আপনাকে ট্রেডিং করতে হবে। এজন্য আপনাকে বাছাই করতে হবে কোন ক্রিপ্টোকারেন্সির ওপর ট্রেডিংকরবেন। এজন্য আপনাকে মার্কেট নিয়ে অনেক গবেষণা করতে হবে। দেখতে হবে কোন কারেন্সি ভবিষ্যতে দাম বাড়তে পারে। পাশাপাশি স্ক্যাম করার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য করতে হবে। কেননা ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রা গুলো প্রচুর স্ক্যাম করে। এ ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এরপর যখন আপনি মার্কেট যাচাই করার পর একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাবেন। তখন যে কোন একটি ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর ট্রেডিং তথা বিনিয়োগ করবেন।
এরপর অপেক্ষার পালা। যখন মূল্য বৃদ্ধি পাবে। তখনই আপনি বিক্রি করে দিবেন। এর মাধ্যমে খুব সহজে অনেক লাভবান হতে পারবেন।
২. ক্রিপ্টোকারেন্সির এক্সচেঞ্জ ব্যবসা ।
ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ করে খুব চমৎকার ব্যবসা করতে পারবেন। অর্থাৎ একজন গ্রাহকের কাছে dogecoin রয়েছে। তার বিটকয়েন প্রয়োজন।
এজন্য সে এক্সচেঞ্জ করতে চাচ্ছে। বাইন্যান্স এর মত যত সেন্ট্রালাইজড এক্সচেঞ্জ রয়েছে তাদের কাছ থেকে এক্সচেঞ্জ করতে গেলে ফি বেশি লাগবে।
তাই ঐ গ্রাহক যাচ্ছে এমন একটি মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ করতে যেখানে খরচ কম লাগবে। এই জায়গায় হল আপনার ব্যবসা।
আপনি ওই গ্রাহককে এক্সচেঞ্জ করে দিবেন মার্কেট থেকে একটু কম রেটে। এখান থেকে আপনি অনেক লাভ করতে পারবেন।
এ ব্যবসা করার জন্য নিয়ম হলো
- আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। ওয়েব সাইটে অবশ্যই আকর্ষণীয় হতে হবে ।
- ওয়েব সাইটে প্রত্যেকটি কয়েন এর মূল্য দিয়ে দিবেন।
- সব সময় একটিভ থাকার চেষ্টা করবেন।
- ভালোভাবে প্রচার প্রসার করতে হবে।
- প্রচার প্রসার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করতে পারেন।
যারা এই সমস্ত ব্যবসা করে থাকে তাদের থেকে আইডিয়া নিতে পারেন। এভাবে খুব সহজেই একচেঞ্জ ব্যবসা করতে পারেন।
৩. ক্রিপ্টোকারেন্সি ডলার ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন।
যারাই ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং করে থাকে তাদের কাছে USDT , DAI , BUSD ইত্যাদি এরকম কয়েন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা জানি ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম সব সময় ওঠানামা করে। আর যারা ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং করে থাকে তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্ত কয়েনগুলোর ট্রেডিং করে থাকে।
এ সমস্ত ডলারগুলোর দাম মাঝে মাঝে অনেক বৃদ্ধি পায়। এজন্য আপনি সর্বপ্রথম মার্কেট নিয়ে গবেষণা করবেন।
এরপরে বের করবেন কোন ডলারের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। ও সমস্ত কয়েন গুলো সংগ্রহ রাখবেন। এরপর যখন বৃদ্ধি পাবে তখন বিক্রি করে দিবেন।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ডলার ক্রয় বিক্রয় করার নিয়ম
আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি ডলার ক্রয় বিক্রয় করতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে যে সমস্ত ক্রিপ্টোকারেন্সির এক্সচেঞ্জ সাইট রয়েছে। যেমন বাইন্যান্স।
সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। সেখানে পিটুপি এর মাধ্যমে খুব সহজেই এ সমস্ত কয়েন বা ডলার বিক্রয় করতে পারবেন। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
৪.ক্রিপ্টোকারেন্সির পেমেন্ট সেবা দিতে পারেন ।
বর্তমানে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে ক্রিপ্টোকারেন্সির পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করেছে। যার ফলে অনেকেরই কেনাকাটার সময় ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রয়োজন পড়ে।
তারা এক্সচেঞ্জ সাইট থেকে ক্রয় করতে ঝামেলা মনে করে। আবার অনেকে এ সম্পর্কে তাদের আইডিয়া নেই।
ফলে তাদের এমন একজন লোকের প্রয়োজন হয় যে ক্রিপ্টোকারেন্সি সংগ্রহ করার ব্যাপার তাদের হেল্প করবে।
এই স্থানে আপনি তাদের হেল্প করতে পারেন এবং তাদের সেবা করতে পারেন।
এই ব্যবসা করার নিয়ম
- আপনি একটি চমৎকারভাবে ওয়েবসাইট খুলবেন।
- সেখানে আপনার সেবার কথাটা উল্লেখ করবেন।
- সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার প্রসার করবেন।
- যদি বলে ঝামেলার মনে হয় তাহলে ফেসবুকে বিজনেস একাউন্ট খুলবেন। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার প্রসার করবেন।
এভাবে খুব সহজে ই এই ব্যবসাটি করতে পারেন।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা কি হালাল ?
ক্রিপ্টোকারেন্সি হালাল না হারাম এটা নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। অনেক দেশে ক্রিপ্টোকারেন্সি অনুমোদন দিয়েছে। আবার অনেক দেশে অবৈধ ঘোষণা করেছে।
তবে আসল কথা হলো ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে হালাল হারামের কোন বিষয় নয়। এটা একটি ডিজিটাল মুদ্রা।
আপনি এই ডিজিটাল মুদ্রাকে ব্যবহার করে নানান কিছু ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন । কোন অসুবিধে নয় ।
পরিশেষে বলবো
উপরে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। অতএব আপনি যদি এই ব্যবসা করতে চান ।
তাহলে অবশ্যই আপনাকে সর্বপ্রথম পরিপূর্ণভাবে ধারণা নিতে হবে ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে। এরপর আপনাকে মার্কেট গবেষণা করতে হবে।
এরপর আপনি ব্যবসা শুরু করে দিবেন উপরের পদ্ধতি অনুযায়ী। লেখাতে ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।
FAQ
ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আয় কি সম্ভব ?
হ্যাঁ ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আয় করা সম্ভব । আয় করার জন্য অবশ্যই আপনাকে কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কেননা ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজার উঠানামা করে।
৪টি উপায়ে আয় করতে পাড়বেন ।
১.ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে ।
২.ক্রিপ্টোকারেন্সির এক্সচেঞ্জ করে ।
৩. ক্রিপ্টোকারেন্সি ডলার ক্রয় বিক্রয় করে ।
৪.ক্রিপ্টোকারেন্সির পেমেন্ট সেবা দিয়ে ।
খুব সহজে অনেক লাভবান হতে পারবেন।