আপনি কি বর্তমান প্রেক্ষাপটে চাকরি নাকি ব্যবসা কোনটি বেছে নেওয়া উচিত এ সম্পর্কে কোন তথ্য খুঁজতেছেন ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।
আমরা প্রত্যেকেই লেখাপড়া শেষ করেই জীবিকা নির্বাহ করার জন্য হয়তো চাকরি অথবা ব্যবসা নির্বাচন করি।
এই পদ্ধতিগুলো কেমন যেন আমাদের জীবনের সাথে আঠার মত লেগে আছে। অনেকেই না বুঝেই ব্যবসা শুরু করে দেয়।
যার ফলে ব্যবসার মধ্যে সফলতা লাভ করতে পারে না। অনেকেই আবার না বুঝেই চাকরি শুরু করে দেয় ফলে তার চাকরি জীবনে বোরিং ছাড়া আর কিছুই সে অনুভব করতে পারে না। অতএব এক্ষেত্রে আমাদেরকে বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
যে জিনিসের প্রতি আপনার ইন্টারেস্ট রয়েছে পাশাপাশি অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং আপনার সুবিধা মনে হয় ওই টার দিকেই ঝুকা উচিৎ।
এতে করে আপনার লাইফটা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। তাই আজ আমি বর্তমান প্রেক্ষাপটে চাকরি নাকি ব্যবসা কোনটি বেছে নেওয়া উচিত ও কোনটা ভালো এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পাশাপাশি এগুলোর সুবিধা কি অসুবিধা কি প্রত্যেকটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। ফলে আপনি ডিসাইড করবেন কোন পেশাটা আপনার জন্য ভালো।
এতে করে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যভাবে আপনার লাইফটাকে বেছে নিতে পারবেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে চাকরি নাকি ব্যবসা কোনটি বেছে নেওয়া উচিত ?
ব্যবসা এবং চাকরির জন্য নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি নিজস্ব চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অতএব কোনটা গ্রহণ করবেন তা নির্ভর করবে আপনার জীবনের লক্ষ্যের উপর।
চাকরি করার সুবিধা :
- কর্মক্ষেত্রের সুবিধা: বড় কোম্পানিগুলিতে স্বাস্থ্য বীমা, পেনশন, বোনাস, এবং অন্যান্য কর্মক্ষেত্রের সুবিধা দেওয়া হয়।
- কম ঝুঁকি: ব্যবসার তুলনায় চাকরিতে আর্থিক ঝুঁকি সাধারণত কম থাকে।
- নিয়মিত আয়: মাসিক বেতন নির্ধারিত, যা নিরাপত্তা দেয়।
- কাজের প্রশিক্ষণ: অনেক কোম্পানি তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে, যা ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার উন্নয়নে সহায়ক।
- উন্নতির সুযোগ: অনেক কোম্পানি প্রশিক্ষণ, উন্নয়ন এবং ক্যারিয়ার অগ্রগতির সুযোগ দেয়।
- নির্ধারিত দায়িত্ব: আপনি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট কাজ বা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন, যার ফলে অন্য দিক নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তার প্রয়োজন হয় না।
- কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য: কিছু চাকরিতে নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, যা কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
চাকরি করার অসুবিধা:
- ক্যারিয়ার আটকে যাওয়া: কিছু কিছু ক্ষেত্রে, দীর্ঘদিন একই কাজ করার ফলে ক্যারিয়ার স্ট্যাগন্যান্ট হয়ে যেতে পারে।
- সীমিত নিয়ন্ত্রণ: নিয়ম, নীতি এবং সিদ্ধান্তগুলো কোম্পানির দ্বারা নির্ধারিত হয়।
- নির্ভরশীলতা: চাকরির স্থায়িত্ব কোম্পানির পারফরম্যান্স এবং ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল।
- নিয়মিত মূল্যায়ন: প্রায়ই আপনার কাজের মূল্যায়ন বা পারফরম্যান্স রিভিউ করা হয়, যা চাপের কারণ হতে পারে।
- নির্দিষ্ট আয়: বেতন বৃদ্ধির গতি অনেক সময় ইচ্ছামত হয় না।
আরো পড়ুন :
- গ্রামে ক্ষুদ্র ব্যবসার আইডিয়া: প্রতিমাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয়
- ঘরে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসার ৩টি আইডিয়া
- ১২টি লাভজনক ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা
ব্যবসা করার সুবিধা :
- স্বাধীনতা: নিজের ব্যবসায় নিজেই সমস্ত সিদ্ধান্ত এবং কৌশল গ্রহণ করতে পারেন।
- নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি: ব্যবসার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারেন, যা আপনার সামাজিক ও ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বাড়ায়।
- প্রচুর আয়ের সম্ভাবনা: সফল হলে ব্যবসা বেতন থেকে অনেক বেশি লাভ আনতে পারে।
- ব্যক্তিগত তৃপ্তি: নিজস্ব কিছু গড়ে তোলা বেশ সন্তোষজনক এবং অর্জনের অনুভূতি এনে দেয়।
- সুযোগ: ব্যবসায় অনেক সুযোগ থাকে। নতুন পণ্য বা পরিষেবা আনতে এবং তা বাজারে চালু করার সুযোগও আপনি পাবেন।
ব্যবসা করার অসুবিধা:
- ঝুঁকি: ব্যবসা শুরু এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে আর্থিক, পরিচালনাগত এবং বাজারের ঝুঁকি থাকে।
- অসুবিধার সময়: ব্যবসার ক্ষেত্রে মন্দা বা অর্থনৈতিক সংকট এলে ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
- প্রাথমিক বিনিয়োগ: ব্যবসা শুরু করতে প্রায়ই বড় অংকের মূলধনের প্রয়োজন হয়, এবং লাভজনক হতে সময় লাগতে পারে।সফল না হলে এই টাকা হারানোর ঝুঁকি থাকে।
- কাজের চাপ: ব্যবসায়ের দায়িত্ব আপনার একার, তাই সবদিক সামলাতে প্রচুর কাজের চাপ থাকে। ব্যবসা চালাতে কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি থাকে না, দিনরাত কাজ করতে হতে পারে।
চাকরি নাকি ব্যবসা এই দুইটা থেকে আপনার কোনটা বেছে নেওয়া উচিত ?
আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে । আপনার জীবনের লক্ষ্য কী ?
আপনি কি দ্রুত সাফল্য চান পাশাপাশি আপনি যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে এবং ঝুঁকি নিতে পছন্দ করেন ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চান তাহলে ব্যবসা আপনার জন্য ভালো হবে।
নাকি আপনি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল ক্যারিয়ার গড়তে চান এবং নির্দিষ্ট কাজ পছন্দ করেন পাশাপাশি ঝুঁকি নিতে ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ভয় পান তাহলে চাকরি ভালো হবে।
মিশ্র পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন :
অনেকেই চাকরির পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করেন। এতে করে চাকরির নিরাপত্তা বজায় থাকে, পাশাপাশি ব্যবসার অভিজ্ঞতাও অর্জন করা যায়।
পরিশেষে বলবো :
উপরে বর্তমান প্রেক্ষাপটে চাকরি নাকি ব্যবসা কোনটি বেছে নেওয়া উচিত এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যদি বিষয়গুলো আপনি ফলো করেন তাহলে খুব সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
যদি লেখাটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।