আপনি কি ডিমের ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এ আর্টিকেলটা আপনার জন্য।
আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে বেকারত্বের সংখ্যা অনেক বেশি বেড়েছে। চাকরির খাত কম হওয়ার কারণে অনেকেই লেখা-পড়া করে বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করার পরও চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগেন।
তখন কি করবেন কিছু বুঝে উঠতে পারেন না। তাদের কে বলবো, এই স্বার্থপর শহরে মিথ্যা চাকরির আশা না করে ব্যবসার দিকে মনোনিবেশ করেন।
জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। এখন যদি বলেন, ব্যবসা করার মতো এমাউন্ট নেই। তাহলে ব্যবসা করবো কিভাবে ?
আমি বলবো, অল্প পুঁজির অনেক লাভজনক ব্যবসা আছে। আপনি অল্প পুঁজির যে কোন একটা ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আমি আপনাকে ডিমের ব্যবসা করার আহ্বান জানাবো। কারণ, অল্প পুঁজির মধ্যে এখন ডিমের ব্যবসা অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
মানুষ সাধারণত সকালে পরোটার সাথে ডিম খেতে চায়। আবার দুপুর কিংবা রাতে ভাতের সাথে একটা ডিম ভাজি থাকতেই হবে।
ডিম মানুষের পছন্দের খাবার সমুহের মধ্যে অন্যতম একটি খাবার। কারণ, ডিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য।
ডিম একটি আমিষ জাতীয় খাবার। আর বাচ্চাদের জন্য তো প্রতি বেলা একটি করে ডিম সিদ্ধ থাকে।
সচেতন জনগণের আগ্রহ ডিমের প্রতি একটু বেশিই। সুতরাং বর্তমান বাজারে ডিমের চাহিদাও অনেক বেশি।
তাই আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে ডিমের ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য কি কি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো আলোচনা করব।
যাতে করে আপনি খুব সহজেই ব্যবসা করতে পারেন। অতএব আপনাকে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে হবে।
ডিমের ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪
যেহেতু বাজারে ডিমের চাহিদা বেশি তাই আপনিও ডিমের ব্যবসা করে দ্রুত লাভবান হতে পারবেন।
ডিমের ব্যবসায় দ্রুত লাভবান হওয়ার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে হবে । নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ডিমের ব্যবসা করতে হলে যে সব বিষয় জানা প্রয়োজন।
- পূর্ব পরিকল্পনা
- মূলধন
- বর্তমান বাজার অনুযায়ী ডিমের ব্যবসার প্রকারভেদ
- স্থান নির্বাচন করা
- সতর্কতা অবলম্বন করা
- কাস্টমারদের সাথে সদাচরণ করা
এতক্ষণ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম । এখন ডিমের ব্যবসার আইডিয়া বিস্তারিত আলোচনা করব ।
১, পূর্ব পরিকল্পনা ।
যে কোন ব্যবসার জন্য আপনাকে পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে। কারণ, পরিকল্পনা মাফিক সব কাজে ক্ষতির আশঙ্কা খুব কম থাকে।
এবং দ্রুত লাভবান হওয়ার পিছনে পূর্ব পরিকল্পনা অনেক কাজে দেয়। ডিমের ব্যবসার পূর্ব পরিকল্পনা হলো ,
আপনি ডিমের ব্যবসাটা কি বড় পরিসরে শুরু করবেন না ছোট পরিসরে। এটা প্রথমেই নির্ধারণ করতে হবে।
এবং যারা বর্তমানে ডিমের ব্যবসা করছে তাদের সাথে একটু পরামর্শ করে আপনি ডিমের ব্যবসা সম্পর্কে ভালোভাবে আইডিয়া নিয়ে নিবেন। তারপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আপনি সামনে অগ্রসর হবেন।
২, মূলধন ।
প্রতিটি ব্যবসার জন্য মূলধন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যবসা শুরু করার আগে প্রায় সবাই মূলধন নিয়ে একটু বেশিই টেনশন করে থাকে।
কেননা, মুলধনের উপর ভিত্তি হবে আপনার ব্যবসা। কি পরিমান লাভ হবে, এটা নির্ভর করে আপনার মুলধনের উপর।
তবে, আপনি যেহেতু ডিমের ব্যবসা করতে চান , তাহলে আপনার জন্য টেনশনের কিছু নেই। কারণ,ডিমের ব্যবসা হলো অল্প পুঁজির মধ্যে অনেক লাভজনক একটা ব্যবসা।
আপনি যদি সাধারণভাবে ব্যবসা করতে চান , তাহলে আপনার জন্য ৪০-৫০ হাজার টাকা যথেষ্ট। এবং লাভ ও সন্তোষজনক হয়।
আর আপনি যদি ডিমের ব্যবসাটা বড় আকারে করতে চান, তাহলে আপনার জন্য দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে।
তবে , শুরুতে ডিমের ব্যবসা ছোট পরিসরে করলে ভালো হবে। যেহতু আপনার পুঁজি কম । তবে মন খারাপের কিছু নেই ছোট পরিসরে ডিমের ব্যবসা হলেও লাভের পরিমাণ ঠিকই থাকবে।
আরো পড়ুন : বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার ১৬টি আইডিয়া ২০২৪
৩, বর্তমান বাজার অনুযায়ী ডিমের ব্যবসার প্রকারভেদ ।
ডিমের ব্যবসা অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয়। যেহেতু ডিম নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের মধ্যে একটি।
চাহিদা বেশি থাকার কারণে বর্তমান বাজারে ডিমের ব্যবসা মানুষ অনেক ভাবে করে থাকে। আমরা নিচে ডিমের ব্যবসার প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সুতরাং আপনাকে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। তাহলে আপনি বর্তমান বাজার অনুযায়ী ডিমের ব্যবসার প্রকারভেদ বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
- (ক) পাইকারি ডিমের ব্যবসা ।
- (খ) খুচরা ডিমের ব্যবসা ।
- (গ) ভ্যানে ডিমের ব্যবসা ।
- (ঘ) সিদ্ধ ডিমের ব্যবসা ।
(ক) পাইকারি ডিমের ব্যবসা ।
পাইকারি ডিমের ব্যবসা করতে হলে আপনার মূলধন একটু বেশিই লাগবে। যদি আপনার মূলধন যথেষ্ট পরিমাণে থাকে, তাহলে আপনি পাইকারি ডিমের ব্যবসা করতে পারেন।
কারণ, পাইকারি ডিমের ব্যবসা করতে পারলে লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। আপনি দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে যাবেন। পাইকারি ডিমের ব্যবসা আপনি দুই ভাবে করতে পারেন।
প্রথমত: পাইকারি ডিমের ব্যবসা সবচেয়ে লাভজনক হবে যদি আপনি নিজে মুরগি পালন করেন।
অনেকগুলো মুরগি পালন করতে পারলে আপনি প্রতিনিয়ত অনেকগুলো ডিম পাবেন। এভাবে পাইকারি ডিমের ব্যবসা করলে আপনি দ্রুত লাভবান হতে পারবেন।
দ্বিতীয়ত: আপনার যদি মুরগি পালন করতে সমস্যা হয়। তাহলে আপনি কোন সরাসরি মুরগির ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
এবং প্রতিনিয়ত তাদের থেকে ডিম ক্রয় করতে হবে। আর এই ডিমগুলো আবার আপনাকে বিভিন্ন জায়গায় হোটেল বা রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে হবে।
অথবা বিভিন্ন বিকারিগুলোতে ডিম পৌঁছাতে পারেন। এভাবে পাইকারি ডিমের ব্যবসা করতে পারলেও আপনি অনেক লাভবান হবেন।
(খ) খুচরা ডিমের ব্যবসা ।
আপনার যদি মূলধনে কিছু ঘাটতি থাকে , তাহলে আপনি খুচরা ডিমের ব্যবসা করতে পারেন। বর্তমান বাজারে খুচরা ডিমের ব্যবসার চাহিদা ও অনেক রয়েছে।
এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন পাইকারি ডিমের ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা আপনি সরাসরি যারা মুরগি পালন করে , তাদের সাথে যোগাযোগ করলে আরো বেশি ভালো হবে। এবং আপনি ব্যবসায় অনেক লাভবান ও হবেন।
(গ) ভ্যানে ডিমের ব্যবসা ।
বর্তমান সময়ে মানুষ বাজার-ঘাট করার জন্য বাজারে যাওয়ার সময় পায় না। সবাই খুব ব্যস্ততায় সময় অতিবাহিত করছে।
এজন্য তারা চলাফেরার সময় রাস্তায় ভ্যান থেকে বেশিরভাগ সময় কেনাকাটা করে থাকেন। সুতরাং আপনি ভ্যানে করেও ডিমের ব্যবসা করতে পারেন।
(ঘ) সিদ্ধ ডিমের ব্যবসা ।
বর্তমান সময়ে মানুষ খাবার নিজে রান্না না করে বাহির থেকে ক্রয় করে খেতে চায়। ডিমের বেলায় ও ব্যতিক্রম কিছু নয়। ডিম ক্রয় করে আবার গরম পানিতে সিদ্ধ করার মানসিকতা খুব মানুষের রয়েছে।
এজন্য তারা রাস্তা-ঘাটে চলাফেরার সময় সিদ্ধ ডিম খাওয়ার জন্য খুজে থাকে। সুতরাং চাহিদা যেহেতূ বেশি তাই আপনি ও করতে পারেন। একটা কথা মনে রাখবেন, কোন কাজকে কখনো ছোট করে দেখবেন না।
৪, স্থান নির্বাচন করা ।
সব ব্যবসা সফলতার অর্জনের পিছনে স্থান নির্বাচন করার ভুমিকা অনেক বেশি থাকে। আপনি যেখানে ব্যবসা করবেন।
সেই জায়গাটা খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া। প্রয়োজনে অন্যের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। পরামর্শক্রমে ডিমের ব্যবসার জন্য একটা উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করবেন।
সেক্ষেত্রে আপনি ভ্যানে করে ডিমের ব্যবসা করতে চাইলে, বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা , স্কুল, কলেজের সামনে বসতে পারেন।
অথবা বিভিন্ন অফিস, আদালতের সামনে বসতে পারেন।অথবা বিভিন্ন মার্কেটের সামনেও বসতে পারেন।
আর যদি আপনি ডিম সিদ্ধের করে ব্যবসা করতে চান, তাহলেও আপনাকে উপযুক্ত স্থানে বসতে হবে।
সেক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন বাস অথবা রেল স্টেশনে বসতে পারেন। অথবা বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে ডিম সিদ্ধ নিয়ে বসতে পারেন। এসব জায়গায় ডিমের চাহিদা বেশি থাকে।
৫, সতর্কতা অবলম্বন করা ।
ডিমের ব্যবসার ক্ষেত্রে খুব বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ, একটু অবহেলা করার জন্য আপনার কিছু ডিম ভেঙ্গে যেতে পারে।
তখন আপনার ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও ভাঙ্গা ডিম ও বিক্রি করা যায়। তবুও সতর্কতা অবলম্বন করলে আর বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকে না।
৬, কাস্টমারদের সাথে সদাচরণ করা ।
ব্যবসা করতে হলে আপনাকে সব কাস্টমারদের কে আপন ভেবে আচারণ করতে হবে। কেননা, তারাই আপনার ব্যবসা উন্নতির মাধ্যম।
তাদের সাথে সব সময় সম্মানজনক আচার-ব্যবহার করা। কাস্টমাদের সাথে ভালো ব্যবহার করলে কাস্টমার আপনার কাছে বারবার আসবে।
উপসংহার
উপরে ডিমের ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করলাম । ডিমের ব্যবসা খুব লাভজনক একটা ব্যবসা।
সুতরাং আপনি যদি উপরোক্ত কথাগুলো মাথায় রেখে ফলের ব্যবসা শুরু করেন। তাহলে আপনি লাভবান হতে পারবেন।
আশাকরি আপনি অনেক উপকার পেয়েছেন । লেখা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।
FAQ
ডিমের ব্যবসায় লাভ কেমন ?
আপনি যদি সাধারণভাবে ব্যবসা করতে চান , তাহলে আপনার জন্য ৪০-৫০ হাজার টাকা যথেষ্ট এবং লাভ ও সন্তোষজনক হয়।
এ ক্ষেত্রে ডিমের ব্যবসায় লাভ হবে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা ।
আর আপনার পুজি যদি বেশি হয় তাহলে লাভ আরো বেশি হবে ।