আপনি কি ৫ লাখ টাকার ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।
বর্তমান সময়ে ব্যবসা সকলেই করতে চায়। কেননা ব্যবসার মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা সকলেই অর্জন করতে চায়।
এজন্য প্রতিটি মানুষের চিন্তা থাকে বিজনেস করার। ব্যবসা আগের মত সহজ নয়। প্রতিযোগী বেড়ে গিয়েছে।
এজন্য অবশ্যই ব্যবসা শুরু করার জন্য ভালোভাবে প্ল্যানিং করতে হবে। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা করতে হবে।
পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পুজি নিয়ে শুরু করতে হবে। আপনার কাছে ৫ লক্ষ টাকা থাকে। তাই আপনি একটি ভালো ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন।
এজন্য ব্যবসার বিভিন্ন আইডিয়া খুঁজতেছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে ৫ লাখ টাকার ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরব। অতএব আপনাকে এই লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
তাহলে অবশ্য আপনি ভালো একটা আইডিয়া পেয়ে যাবেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
৫ লাখ টাকার ব্যবসা আইডিয়া ২০২৪
আমি এখানে এমন কিছু ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করব যে ব্যবসা গুলো খুবই লাভজনক। পাশাপাশি অনেক প্রসিদ্ধ।
যদি এই ব্যবসা আপনি সঠিক উপায়ে করতে পারেন তাহলে লসের শিকার হবেন না। বরং সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে যাবেন।
এবং অনেক লাভবান হবেন। তাই অবশ্য আপনাকে প্রতিটি পদক্ষেপ ফলো করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী ব্যবসা করতে হবে। আশাকরি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
১. ডিলারশিপ ব্যবসা করতে পারেন।
ডিলারশিপ ব্যবসা অনেক লাভজনক। সাধারণত ডিলারশিপ বলতে আমরা বুঝি কোন একটি কোম্পানির নির্দিষ্ট একটি এলাকায় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা।
অর্থাৎ কোন একটি কোম্পানির পন্য নির্দিষ্ট এলাকায় বিক্রি করা। পাশাপাশি উক্ত কোম্পানির জন্য ঐ নির্দিষ্ট এলাকায় সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালন করা ।
এই ব্যবসায় লাভ অনেক বেশি। ঝুঁকি অনেক কম। ৫ লাখ টাকার ব্যবসা হিসেবে এ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
এই ব্যবসা করার জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ বা দক্ষতা লাগবে ।
- উপস্থিত বুদ্ধি প্রয়োজন।
- পরিপূর্ণভাবে মার্কেটিং প্ল্যানিং লাগবে।
- বাজার বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারার ক্ষমতা।
- ভালো ব্যবহার।
- সঠিক সময়ে পণ্য পৌঁছানো।
ইত্যাদি এরকম যোগ্যতা নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে হবে।
ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার জন্য কি কি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ?
এই ব্যবসা শুরু করার জন্য অবশ্যই কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
- ভালো কোম্পানি টার্গেট করতে হবে।
- পন্যের মান যেন গুণগত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
- ট্রেড লাইসেন্স লাগবে।
- রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- নিজস্ব একটি এজেন্সি লাগবে।
- অবশ্যই আপনার প্রোফাইলে কোন এলাকার জন্য ডিলারশিপ নিতে চাচ্ছেন সেটা লিখতে হবে।
- কোম্পানির সাথে চুক্তি করতে হবে।
- চুক্তির মধ্যে কমিশন কত এবং কি পরিমান পণ্য নিতে চাচ্ছেন এগুলো উল্লেখ করতে হবে ?
- পাশাপাশি পণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে এক্ষেত্রে কি নিয়ম হতে পারে এগুলো চুক্তি করতে হবে ?
মোটকথা এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চুক্তি করতে হবে।
ডিলারশিপ হিসেবে কি কি ব্যবসা করতে পারেন :
- কৃষি পণ্য ও যন্ত্রপাতির ডিলারশিপ
- রডের সিমেন্টের ডিলারশিপ
- চা পাতার ডিলারশিপ
- টাইলসের ডিলারশিপ
- ইলেকট্রিক পন্যের ডিলারশিপ
ইত্যাদি এরকম কোম্পানির ডিলারশিপ নিতে পারেন।
আরো পড়ুন : বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার ১৬টি আইডিয়া ২০২৪
২. ফাস্টফুডের দোকান দিতে পারেন।
ফাস্টফুড এর খাবার খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দিন দিন চাহিদা বেড়েই চলছে। আপনি খুব সহজে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
ফাস্টফুডের ব্যবসা করার নিয়ম
- ভালো একটি স্থান নির্বাচন করতে হবে। যেমন বাজার , স্কুল কলেজ, শহর , উপশহর , বাস স্ট্যান্ড , রেলস্টেশন ইত্যাদি এরকম লোকসমাগম স্থানে দোকান দিতে হবে। এতে খুব দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।
- আনকমন খাবার সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য বিভিন্ন খাবারের কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
- খাবারে মান ভালো করতে হবে।
- দোকান আকর্ষণীয়ভাবে সাজাতে হবে।
- গ্রাহকদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে।
ইত্যাদি এরকম পদ্ধতি গ্রহণ করে ফাস্টফুডের দোকান দিতে পারলে খুব সহজেই সফলতা লাভ করতে পারবেন।
৩. ৫ লাখ টাকার ব্যবসা হিসেবে পোল্ট্রি মুরগির ফার্ম দিতে পারেন ।
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ব্যবসা হলো পোল্ট্রি মুরগির ব্যবসা। পোল্টি মুরগির চাহিদা অনেক বেশি।
কেননা এই মুরগিও দিয়েন নানান রকমের মজাদার খাবার তৈরি করা হয়।৫ লাখ টাকার ব্যবসা হিসেবে এ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। তাহলে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য সবচেয়ে পারফেক্ট।
পোল্ট্রি মুরগির ব্যবসা করার নিয়ম
- আপনাকে একটি খামার তৈরি করতে হবে।
- খামার তৈরি করার জন্য মোটামুটি এক লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
- পোল্টির বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে। মোটামুটি ৩০০০ বাচ্চা সংগ্রহ করবেন। এতে দেড় লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
- পোল্টির খাবার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
- আরো আনুষঙ্গিক ৫০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
এক কেজি মুরগি তৈরি করতে মোটামুটি বর্তমান বাজার অনুযায়ী ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা খরচ হতে পারে।
আর যদি আপনি তাকে পাইকারি রেট ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি করতে পারেন। তাহলে আপনার প্রতি কেজিতে মোটামুটি বিশ টাকা লাভ হবে।
এই হিসেবে আপনার ৫ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করে ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।
আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন। এ ব্যবসার মোটামুটি লাভ অনেক বেশি। তাই দেরি না করে আজই এ ব্যবসা শুরু করে দিন।
৪. কাপড়ের ব্যবসা করতে পারেন।
বর্তমান সময়ে কাপড়ের ব্যবসা খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। প্রফেশনাল ব্যবসা। 5 লক্ষ টাকা দিয়ে খুব সহজেই এ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
কাপড়ের ব্যবসা করার নিয়ম
- কোন ধরনের কাপড় নিয়ে ব্যবসা করবেন তা নির্বাচন করতে হবে। কেননা কাপড়ের নানান ধরনের রয়েছে। যেমন : থ্রিপিস , শাড়ি , শার্ট ইত্যাদি।
- ভালো একটি স্থান নির্বাচন করতে হবে। লোক সমগম বেশি হয়।যেমন বাজার , স্কুল কলেজ, শহর , উপশহর , বাস স্ট্যান্ড , রেলস্টেশন ইত্যাদি এরকম লোকসমাগম স্থানে দোকান দিতে হবে। এতে খুব দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।
- কাপড় পাইকারি বাজার থেকে ক্রয় করতে হবে। যেমন ইসলামপুর , পাবনা ইত্যাদি।
- আকর্ষণীয় ডিজাইনের কাপড় সংগ্রহ করতে হবে।
উপরে বিষয়গুলো ফলো করে যদি কাপড়ে ব্যবসা করতে পারেন খুব সহজেই সফলতা লাভ করতে পারবেন।
৫.ফার্মেসির ব্যবসা করতে পারেন।
এই ব্যবসাটি অনেক লাভজনক। ঔষধ ছাড়া মানুষের জীবন থাকে না। ওষুধ বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ওষুধের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অতএব ৫ লাখ টাকার ব্যবসা হিসেবে এ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
ফার্মেসির ব্যবসা শুরু করার নিয়ম
- ভাল একটি স্থান নির্বাচন করতে হবে। যেমন বাজার , স্কুল কলেজ, শহর , উপশহর , বাস স্ট্যান্ড , রেলস্টেশন ইত্যাদি এরকম লোকসমাগম স্থানে দোকান দিতে হবে। এতে খুব দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।
- ওষুধের ব্যাপার অবশ্যই আপনাকে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এজন্য কোন ফার্মেসিতে গিয়ে ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন।
- সবচেয়ে ভালো হয় সাপ্তাহিকভাবে অভিজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থা রাখতে পারেন। এতে বিক্রয় অনেক বেড়ে যাবে।
এ সমস্ত পদ্ধতিতে ওষুধের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
৬. স্টেশনারি ব্যবসা করতে পারেন ।
স্টেশনারি ব্যবসা অনেক লাভজনক। কোন লস নেই। পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে খুব সহজেই এ ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তাই দেরি না করে আজ এই ব্যবসা শুরু করে দিন।
স্টেশনারি ব্যবসা শুরু করার নিয়ম
- সর্বপ্রথম গ্রাহকদেরকে টার্গেট করতে হবে।
- উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। যেমন বাজার , স্কুল কলেজ, শহর , উপশহর , বাস স্ট্যান্ড , রেলস্টেশন ইত্যাদি এরকম লোকসমাগম স্থানে দোকান দিতে হবে। এতে খুব দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।
- স্টেশনারি পণ্য সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য পাইকারি মার্কেট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। যেমন নীলক্ষেত , নিউ মার্কেট , বাংলাবাজার ইত্যাদি।
- ভালো মানের পণ্য সংগ্রহ করতে হবে।
- গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সংগ্রহ করতে হবে।
উপরের নিয়ম অনুযায়ী খুব সহজে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
৭. ইলেকট্রিক পণ্যের ব্যবসা।
ইলেকট্রিক ব্যবসা অনেক লাভজনক। কোন লস নেই। ৫ লাখ টাকার ব্যবসা হিসেবে এ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। তাই দেরি না করে আজ এই ব্যবসা শুরু করে দিন।
ইলেকট্রিক ব্যবসা শুরু করার নিয়ম
- সর্বপ্রথম গ্রাহকদেরকে টার্গেট করতে হবে।
- উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। যেমন বাজার , স্কুল কলেজ, শহর , উপশহর , বাস স্ট্যান্ড , রেলস্টেশন ইত্যাদি এরকম লোকসমাগম স্থানে দোকান দিতে হবে। এতে খুব দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।
- ইলেকট্রিক পণ্য সংগ্রহ করতে হবে। এজন্য পাইকারি মার্কেট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
- ভালো মানের পণ্য সংগ্রহ করতে হবে।
- গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সংগ্রহ করতে হবে।
উপরের নিয়ম অনুযায়ী খুব সহজে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
পরিশেষে বলবো
উপরে ৫ লাখ টাকার ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। অতএব আপনি যদি এই ব্যবসা করতে চান ।
তাহলে অবশ্যই আপনাকে সর্বপ্রথম পরিপূর্ণভাবে ধারণা নিতে হবে । এরপর আপনাকে মার্কেট গবেষণা করতে হবে।
এরপর আপনি ব্যবসা শুরু করে দিবেন উপরের পদ্ধতি অনুযায়ী। লেখাতে ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।