আপনি কি ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে চান ? তাহলে আপনি সঠিক স্থানে এসেছেন। এই লেখাটি শুধু আপনার জন্য।
বর্তমান সময়ে সবাই ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ পুঁজি না থাকার কারণে ব্যবসা করতে সাহস পায় না।
আপনি জেনে খুশি হবেন এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো আপনি খুব অল্প টাকায় বা অল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করতে পারবেন খুব সহজে। তাই কোন ধরনের টেনশন না করে আজই এই ব্যবসা গুলো জেনে ব্যবসা শুরু করে দিন।
আর প্রত্যেকটি ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই আগ্রহ থাকতে হয় , সময় দিতে হয় এবং পারদর্শিতা অর্জন করতে হয় বা দক্ষতা থাকতে হয় তাহলে খুব সহজেই ব্যবসায় সফলতা অর্জন করা যায় দ্রুত সময়ে।

অতএব আজ আমি ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য কি কি বিষয়ের লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো আলোচনা করব।
যাতে করে আপনি কোনক্রমে-ই ক্ষতির সম্মুখীন না হন। অতএব আপনাকে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে হবে।
তাহলে আপনি পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন এবংসমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন । চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া ২০২৫
এখানে আমি প্রায় ২৫টি ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো বা আইডিয়া দিব যেগুলো প্রত্যেকটি 10 হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা সম্ভব।
অনেক লাভ রয়েছে এই সমস্ত ব্যবসায় । যদি আপনি সময় দেন এবং পরিশ্রম করেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে যাবেন।
এক নজরে ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
- টিউশন সেন্টার
- চায়ের দোকান
- টিফিন ভেলিভারি
- মোবাইল রিচার্জের দোকান
- মিনারেল ওয়াটারের ব্যবসা
- দর্জির দোকান
- খাবারের হোম ডেলিভারি
- ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা
- মধুর ব্যবসা
- সিজনাল ফলের ব্যবসা
- লন্ড্রি ও ওয়াশিং সার্ভিস
- ফলের জুসের ব্যবসা
- বিউটি পার্লার
- সিঙ্গারা- পেয়াজুর হোটেল
- ফাস্টফুডের ভ্যান
- কাঁচামালের ব্যবসা
- ফেরিওয়ালা
- ভ্যানে ডাবের ব্যবসা
- শুধু সেন্ডেলের ব্যবসা
- পান-সুপারির ব্যবসা
- কবুতরের ব্যবসা
- ঝাল-মুড়ির ব্যবসা
- আতর ও টুপির ব্যবসা
- ঝাড়ুর ব্যবসা
- হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করা ।
বিস্তারিতভাবে ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
এতক্ষণ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম । এখন প্রত্যেকটি ব্যবসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
১, টিউশন সেন্টার

বিষয় | তথ্য |
গড়ে বার্ষিক লাভ | ৫-২০ লাখ টাকা । শিক্ষার্থীর সংখ্যা, ক্লাসের ফি ও বিষয়ভিত্তিক কোর্সের উপর আয় নির্ভরশীল ।(যেমন: একাডেমিক vs প্রফেশনাল কোর্স)। |
গড়ে লাভের হার | ২০-৪০% |
প্রাথমিক খরচ | ১০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা । ক্লাসরুম সেটআপ (বেঞ্চ, বোর্ড), বই/নোট । |
লাভ আসতে সময় | ১-৩ মাস |
বার্ষিক বাজার বৃদ্ধির হার | ১০-২০% । প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষাব্যবস্থা ও কোচিং-এর চাহিদা বৃদ্ধি। |
কারা করা করতে পারবে | শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা উদ্যোক্তা। |
তথ্যসূত্র: | বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ২০২৩, স্থানীয় শিক্ষা খাতের গবেষণা। |
বি:দ্রষ্টব্য: | উপরের ডেটা আনুমানিক; লোকেশন (শহর/গ্রাম), বিষয়ভিত্তিক চাহিদা (যেমন: মেডিকেল/ইঞ্জিনিয়ারিং প্রস্তুতি), ও প্রতিষ্ঠানের সুনামের উপর ভিন্ন হতে পারে। |
একজন স্কুল শিক্ষকের থেকে বেশি মাসে আয় করেন একজন টিউশন সেন্টারের শিক্ষক। সুতরাং, লেখা-পড়া শিখে চাকরির জন্য বারবার ইন্টারভিউ দিয়ে মন খারাপের চেয়ে একটা টিউশন সেন্টার খোলা ভালো।
- এটি একটি লাভজনক এবং সম্মানজনক কাজ, বিশেষত যদি আপনি কোনো বিষয়ে ভালো দক্ষতা রাখেন।
- যে বিষয়টি পড়াবেন, তাতে ভালো জ্ঞান থাকা আবশ্যক। যেমন: গণিত, বিজ্ঞান, ইংরেজি বা বাংলা।
- ছাত্রছাত্রীদের বোঝার এবং সহজে পড়ানোর দক্ষতা থাকতে হবে।
- ধৈর্য ধরে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা থাকা জরুরি।
- সিলেবাস অনুযায়ী পাঠ্যসূচি তৈরি করুন।
- পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় বই, নোট এবং অন্যান্য সরঞ্জাম রাখুন।
সর্বোচ্চ আপনার মাসে ৭-৮ হাজার টাকা মাসে ভাড়া বাবদ দিতে হবে। কিন্তু আপনি আয় করতে পারবেন তার দ্বিগুনের ও বেশি।
কেন টিউশন সেন্টার লাভজনক ?
- খুব কম পুঁজিতে শুরু করা যায়। কেবলমাত্র বই, নোট বা কাগজ-কলমের খরচ হয়।
- নিজের সুবিধামতো সময় বেছে নিয়ে কাজ করা যায়।
- স্থায়ী চাহিদা । অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের সবসময় কোনো না কোনো বিষয়ে সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
- শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়িয়ে আয় বাড়ানো সম্ভব।
- একাধিক বিষয় পড়ানোর মাধ্যমে বেশি আয় করা যায়।
- গ্রুপ টিউশনের মাধ্যমে একই সময়ে একাধিক শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে আয় বাড়ানো সম্ভব।
২, চায়ের দোকান

বিষয় | তথ্য |
গড়ে বার্ষিক লাভ | ৫-২০ লাখ টাকা । ( লোকেশন (ব্যস্ত রাস্তা, অফিস এলাকা) ও গ্রাহকের উপর আয় নির্ভরশীল। ) |
গড়ে লাভের হার | ৩০-৫০% । কম কাঁচামাল খরচ ও দ্রুত টার্নওভারের কারণে লাভের হার বেশি। |
প্রাথমিক খরচ | ১০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা । ( স্টল ভাড়া, বেসিক ইউটেনসিল (কেটলি, কাপ), কাঁচামাল (চা পাতা, দুধ, চিনি) খরচ।) |
লাভ আসতে সময় | ১-২ মাস । দৈনিক গ্রাহকের চাহিদা থাকায় দ্রুত আয় শুরু হয়। |
বার্ষিক বাজার বৃদ্ধির হার | ৮-১৫% |
কারা করা করতে পারবে | ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, কম মূলধনে দ্রুত রিটার্ন চাইছেন এমন উদ্যোক্তা, যারা স্থানীয় চাহিদা বুঝতে পারেন। |
তথ্যসূত্র: | বাংলাদেশ টি বোর্ড, স্থানীয় এফঅ্যান্ডবি মার্কেট গবেষণা (২০২৩)। |
বি:দ্রষ্টব্য: | উপরের ডেটা আনুমানিক; দোকানের লোকেশন, সেবার গুণগত মান, ও অতিরিক্ত আইটেমের কারণে ভিন্ন হতে পারে। |
বাংলাদেশের মানুষ এক সময় চা একদম পছন্দ করতো না। কিন্তু ইংরেজরা চা কে এদেশের মানুষের প্রিয় পানীয় বানিয়ে দিয়েছে।
আমাদের দেশের অনেক মানুষ এমন আছে , যারা দিনে কয়েকবার চা পান করে। সুতরাং, এই ব্যবসা বর্তমান খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
আর এটা করার জন্য খুব বেশি অর্থকড়িও প্রয়োজন হয় না। ছোট একটা টং বেঁধে আপনি ও শুরু করতে পারেন এই অল্প পুঁজির ও বেশি লাভজনক ব্যবসা।
আরো পড়ুন : বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার ১৬টি আইডিয়া
৩, টিফিন ভেলিভারি
বিষয় | তথ্য |
গড়ে বার্ষিক লাভ | ১০-৩০ লাখ টাকা । |
গড়ে লাভের হার | ২৫-৪০% । |
প্রাথমিক খরচ | ১০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা । |
লাভ আসতে সময় | ১-৩ মাস (সঠিক মার্কেটিং ও মানসম্পন্ন খাবার সরবরাহের মাধ্যমে) |
বার্ষিক বাজার বৃদ্ধির হার | ২০-৩০% |
কারা করা করতে পারবে | গৃহিণী, হোম কুক, ছোট উদ্যোক্তা, যারা কম পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক |
তথ্যসূত্র: | বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথোরিটি (BFSA), স্থানীয় F&B স্টার্টআপ ডেটা (২০২৩)। |
বি:দ্রষ্টব্য: | উপরের ডেটা আনুমানিক; ব্যবসার স্কেল (স্থানীয় vs শহরজুড়ে), ডেলিভারি নেটওয়ার্ক, ও মেনু বৈচিত্র্যের উপর ভিন্ন হতে পারে। |
বাসা বাড়িতে সকাল সকাল রান্না না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী টিফিন না নিয়ে চলে যায় স্কুল, কলেজে।
সেক্ষেত্রে যদি আপনি একটু ভালোভাবে বাসায় রান্না করে তাদেরকে ভেলিভারি দিতে পারেন। তাহলেও আপনি মাসে একটা বড় মাপের এমাউন্ট পেয়ে যাবেন।
পাশাপাশি শহরে বিভিন্ন দোকানে দোকানে টিফিন ডেলিভারি দিতে পারেন। কেননা দোকানের মালিক গুলো বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ব্যবসা করতে আসে । ফলে খাবারের ব্যবস্থা থাকে না। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে টিফিন সাপ্লাই দিতে পারেন।
৪, মোবাইল রিচার্জ

বিষয় | তথ্য |
গড়ে বার্ষিক লাভ | ৩-১০ লাখ টাকা । প্রতিদিনের লেনদেনের পরিমাণ (১০০-৫০০+ রিচার্জ) ও কমিশনের হার (০.৫-২%) নির্ভরশীল। |
গড়ে লাভের হার | ৫-১০% । কমিশন-ভিত্তিক আয়, তবে উচ্চ ভলিউমে লাভ জমা হয় (যেমন: প্রিপেইড/ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট)। |
প্রাথমিক খরচ | ১০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা । ( সিম/এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা, স্মার্টফোন/ডিভাইস, ও প্রাথমিক ব্যালেন্স রিচার্জের খরচ।) |
লাভ আসতে সময় | ১-৪ সপ্তাহ । |
বার্ষিক বাজার বৃদ্ধির হার | ৮-১২% । |
কারা করা করতে পারবে | ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, মুদি দোকান/স্টল মালিক , কম মূলধনে দ্রুত আয় চাইছেন এমন উদ্যোক্তা । |
তথ্যসূত্র: | বিটিআরসি (BTRC) রিপোর্ট ২০২৩, স্থানীয় টেলিকম অপারেটর ডেটা। |
বি:দ্রষ্টব্য: | উপরের ডেটা আনুমানিক; লোকেশন, প্রতিযোগিতা, ও অতিরিক্ত সেবা (ইউটিলিটি বিল, টিকেট বুকিং) যোগ করলে আয়/লাভ বাড়তে পারে। |
বর্তমানে সব কিছু অনলাইন ভুক্ত হলেও এখনো মানুষ হাতে থাকা মোবাইল ফোনের রিচার্জ করে থাকে বাহিরের দোকান থেকে।
সুতরাং আপনি যদি কোন দোকান ভাড়া নাও নিয়ে, শুধুমাত্র একটা চেয়ার আর একটা টেবিল নিয়ে একটা উপযুক্ত প্লেসে বসতে পারেন।
তাহলে আপনার মাসে বিনা পরিশ্রমে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনার এক্টিভিটি প্রয়োজন।
এই ব্যবসাটি অনেক চাহিদা পূর্ণ। কেননা মোবাইল যতদিন থাকবে ততদিন ফোন রিচার্জ করতে হবে। রিচার্জ এর চাহিদা বাড়বে কমবে না।
10 হাজার টাকায় ফোন রিচার্জ এর ব্যবসা করতে পারেন। তবে এই ব্যবসায় সফলতা অর্জন করার জন্য অবশ্যই আপনাকে এমন একটি স্থান বাছাই করতে হবে বা নির্ধারণ করতে হবে যে সমস্ত স্থানে জনসমাগম বেশি।
যেমন বাজার , শহর , বাস স্টপেজ ইত্যাদি। এ সমস্ত স্থানে লোকজনের সমাগম বেশি তাই এ সমস্ত স্থানে আপনি যদি ব্যবসা শুরু করেন তাহলে খুব সহজেই অল্প সময়ে সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
মোবাইল রিচার্জ এর পাশাপাশি বিকাশ রকেট ইত্যাদির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তাহলে আরো বেশি লাভবান হতে পারবেন।
৫, মিনারেল ওয়াটার

বিষয় | তথ্য |
গড়ে বার্ষিক লাভ | ৩-১০ লাখ টাকা । |
গড়ে লাভের হার | ২০-৪০% । |
প্রাথমিক খরচ | ১০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা । |
লাভ আসতে সময় | ১-৩ মাস (সঠিক মার্কেটিং ও সরবরাহের মাধ্যমে) |
বার্ষিক বাজার বৃদ্ধির হার | ১৫-২৫%। |
কারা করা করতে পারবে | ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। |
তথ্যসূত্র: | বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (BSTI), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইন (২০২৩)। |
বি:দ্রষ্টব্য: | উপরের ডেটা আনুমানিক; লোকেশন, সেবার গুণগত মান ও মার্কেটিং কৌশলের উপর ভিন্ন হতে পারে। |
পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা মুশকিল। কাজের ফাঁকে, খেলাধূলার ফাঁকে সচরাচর আমাদের পানির প্রয়োজন দেখা দেয়।
তখন মানুষ একটু ফ্রেশ মিনারেল ওয়াটার খুঁজে। এবং বাসে অনেক সময় জামে বসে গলা শুকিয়ে যায় ।
তখন ও পানির অনুসন্ধান করে। সুতরাং, মিনারেল ওয়াটারের ব্যবসাটাও খুব উপযোগী।
৬, দর্জির দোকান

বিষয় | তথ্য |
গড়ে বার্ষিক লাভ | ৩-১০ লাখ টাকা । |
গড়ে লাভের হার | ২৫-৪০% |
প্রাথমিক খরচ | ১০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা । |
লাভ আসতে সময় | ১-২ মাস |
বার্ষিক বাজার বৃদ্ধির হার | ১০-১৫% |
কারা করা করতে পারবে | দক্ষ দর্জি, ফ্যাশন ডিজাইনার |
তথ্যসূত্র: | বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), স্থানীয় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা জরিপ (২০২৩)। |
বি:দ্রষ্টব্য: | উপরের ডেটা আনুমানিক; দোকানের লোকেশন (শহর/গ্রাম), দক্ষতা, ও অতিরিক্ত সেবার (হোম ডেলিভারি, অনলাইন অর্ডার) উপর ভিন্ন হতে পারে। |
বর্তমান সময়ে একটা কাঁচা টাকার ব্যবসা হলো দর্জির দোকান। কারণ, রুচিশীল মানুষ পোশাকের প্রতি একটু বেশি খেয়াল করে।
এজন্য রেডিমেড পোশাকের থেকে বেশি পছন্দ করে থাকে হাতে সেলাই করা পোশাক। এজন্য তো বছরজুড়ে পোশাক বানাতে ব্যস্ত থাকে দর্জির দোকানগুলো।
বর্তমানে প্রতি পিস পাঞ্জাবি এবং শার্টে ৪০০ টাকা করে বানি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বর্তমান সময়ে দর্জির দোকানগুলোতে কি পরিমান ব্যবসা চলছে।
৭, খাবারের হোম ডেলিভারি

বিষয় | তথ্য |
গড়ে বার্ষিক লাভ | প্রতি মাসে ৫০,০০০ – ১,১৫,০০০ টাকা, অর্থাৎ বার্ষিক ৬,০০,০০০ – ১৩,৮০,০০০ টাকা । |
গড়ে লাভের হার | প্রায় ৩০% (উদাহরণস্বরূপ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী উদ্যোক্তারা খাবার বিক্রি করে গড়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত লাভ করছেন) |
প্রাথমিক খরচ | ১০,০০০ – ১,০০,০০০ টাকা (ব্যবসার পরিসর ও পরিকাঠামোর উপর নির্ভরশীল) । ( রান্নার সরঞ্জাম, লাইসেন্স, প্যাকেজিং, ডেলিভারি পার্টনারশিপ ও ডিজিটাল মার্কেটিং খরচ। ) |
লাভ আসতে সময় | ১-৩ মাস (সঠিক মার্কেটিং ও মানসম্পন্ন খাবার সরবরাহের মাধ্যমে) |
বার্ষিক বাজার বৃদ্ধির হার | প্রায় ২৫% |
কারা করা করতে পারবে | গৃহিণী, হোম কুক, ছোট উদ্যোক্তা, যারা কম পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক |
তথ্যসূত্র: | বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথোরিটি (BFSA) রিপোর্ট ২০২৩, স্থানীয় F&B স্টার্টআপ ডেটা। |
বি:দ্রষ্টব্য: | উপরের ডেটা আনুমানিক; ব্যবসার স্কেল (পারিবারিক/বাণিজ্যিক), লোকেশন (শহর/গ্রামীণ), ও মার্কেটিং কৌশলের উপর ভিন্ন হতে পারে। |
বর্তমান সময়ে মানুষ নিজে কাজ করতে খুব কম পছন্দ করে। আর কেনই বা করবে? কারণ, এখন সব কিছুই অনলাইনে পাওয়া যায়।
এক কথায় এখন মানুষের জীবনটা অনলাইন ভিত্তিক গড়ে উঠেছে। এজন্য অনেকে বাসায় খাবার রান্না না করে অনলাইনে অর্ডার করে থাকে।
সুতরাং আপনি যদি খাবারের মান একটু রুচিশীল করতে পারেন । তাহলে অতিদ্রুত আপনি পরিচিত হতে পারবেন।
আর বিভিন্ন হোস্টেলে থাকা শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ সময় অনলাইনে খাবারের অর্ডার করে। সুতরাং বড় কোন হোস্টেলের পাশে থেকে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
৮, ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা
অনলাইন ভিত্তিক এই যুগে ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা করা একদম সহজ কাজ। সাথে সাথে লাভের পরিমাণটা অন্যদের থেকে একটু বেশি হবে।
কারণ, আপনাকে দোকান ভাড়া দেওয়া লাগবে না। পাশাপাশি আপনাকে কোন বাড়তি লোক লাগানো লাগছে না।
তবে , এক্ষেত্রে আপনাকে একটু আন্তরিকতার সাথে কাস্টমার হান্ডেল করতে হবে।আর এই ব্যবসার একটা বড় সুবিধা হলো আপনি এই ব্যবসার সাথে জড়িত থেকে অন্য কাজ ও করতে পারবেন।
৯, মধুর ব্যবসা

মধুর ব্যবসা আপনি দুই ভাবে করতে পারেন। প্রথমত আপনি মধুর চাষ করতে পারেন। যদিও একটু বেশি কষ্ট হবে। কিন্তু এই ব্যবসায় আপনি বেশি লাভবান হতে পারবেন। দ্বিতীয়ত আপনি সুন্দরবন বা এই ধরণের এলাকা যেগুলো মধুর জন্য প্রসিদ্ধ।
সেসব এলাকা থেকে একবারে অনেক মধু পাইকারি দামে এনে শহরে বিক্রি করতে পারেন।এ ব্যবসায় ও যথেষ্ট লাভ রয়েছে।
তবে, দ্বিতীয় পদ্ধতিটি ভালো হবে। কারণ, মানুষের চাহিদা সাধারণত চাষ করা মধুর চেয়ে সুন্দরবনের মধুর প্রতি একটু বেশিই থাকে।
১০, সিজনাল ফলের ব্যবসা
শহরে থাকলেও মানুষের মন থাকে গ্রামে। সুতরাং গ্রামের সিজনাল ফলের প্রতি মানুষের টান একটু বেশিই থাকে। তাই এই ব্যবসাও ভালো জমবে।
১১, লন্ড্রি ও ওয়াশিং সার্ভিস
সবার বাসায় আয়রন মেশিন থাকা সত্ত্বেও সময়ের অভাবে সবাই বাসায় জামা-কাপড় স্ত্রী করতে পারে না।
সুতরাং এই ব্যবসায় আপনি একটু সতর্কতার সাথে করতে পারলে মাসে হাজার হাজার টাকা লাভবান হতে পারবেন।
১২, ফলের জুস ও শরবতের ব্যবসা

১০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে ফলের জুস ও শরবতের ব্যবসা করতে পারেন । সচরাচর চলাফেরার মাঝে সবাই ক্লান্তি বোঝ করে। আর এই ক্লান্তি দুর করতে সবাই লেবু বা অন্য কিছুর শরবত বা ফলের জুস খোঁজে।
এ ব্যবসাটি অনেক চাহিদা পূর্ণ। কেননা সবাই ফল খেতে পছন্দ করে। এর চাহিদা কমবে না বরং ধীরে ধীরে আরো বাড়তে থাকবে।
10 হাজার টাকায় ফলের জুসের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে এ ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করার জন্য অবশ্যই আপনাকে এমন একটি স্থান নির্ধারণ করতে হবে যে স্থানে লোক জনের সমাগম বেশি। যেমন :
- বাজার
- বাসস্টপ
- স্কুল-কলেজ
- গার্মেন্টস
- শহর
- ইত্যাদি এই সমস্ত জায়গায় লোকজনের সমাগম বেশি।
আপনি এ সমস্ত স্থানে ফলের জুসের ব্যবসা করতে পারেন। এ সমস্ত স্থানে ব্যবসা করলে খুব দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
১৩, বিউটি পার্লার

বর্তমান সময়ের মেয়েরা সাজুগুজু করে থাকতে বেশি পছন্দ করে। এজন্য তারা বিউটি পার্লারের সহায়তা নিয়ে থাকে। তবে, এক্ষেত্রে আপনাকে একটু দক্ষ বিউটিশিয়ার দ্বারা কাজ নিতে হবে।
ব্যবসা শুরু করার ধাপ:
১. প্রাথমিক পরিকল্পনা:
- আপনার টার্গেট গ্রাহক কারা হবেন (মহিলা, পুরুষ বা উভয়) ?
- কোন কোন সেবা প্রদান করবেন, তা ঠিক করুন। উদাহরণস্বরূপ: ফেসিয়াল, হেয়ার কাটিং, ম্যানিকিউর, পেডিকিউর, মেকআপ, ব্রাইডাল সার্ভিস, হেয়ার রিবন্ডিং ইত্যাদি।
- ছোট পরিসরে ঘরে বসে শুরু করবেন, নাকি একটি ভাড়া করা জায়গা থেকে চালাবেন ?
২. জায়গা নির্বাচন:
- ঘরে শুরু করতে চাইলে একটি আলাদা রুম বা কর্নার সাজান।
- ঘরে শুরু করতে না চাইলে বাজার, শপিং সেন্টার বা ব্যস্ত এলাকার কাছাকাছি একটি দোকান ভাড়া নিন।
- জায়গা পরিস্কার এবং আকর্ষণীয়ভাবে সাজিয়ে নিন।
৩. প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও সামগ্রী সংগ্রহ করুন :
- সৌন্দর্য পণ্য: ক্রিম, ফেস প্যাক, হেয়ার কালার, শ্যাম্পু, মেকআপ প্রোডাক্ট ইত্যাদি।
- সরঞ্জাম: হেয়ার কাটিং শেয়ার, ব্লো ড্রায়ার, স্টিমার, হেয়ার স্ট্রেটনার, নখ কাটার সরঞ্জাম, ম্যাসাজ টেবিল ইত্যাদি।
- আসবাবপত্র: চেয়ার, আয়না, স্টোরেজ র্যাক।
গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জন করা : গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিন।
পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করা : সরঞ্জাম এবং পার্লারের জায়গা সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
আপডেটেড সেবা গ্রহণ করা : নতুন ট্রেন্ড সম্পর্কে জানা এবং সেই অনুযায়ী সেবা প্রদান।
মানসম্পন্ন পণ্য ব্যবহার করা : নিম্নমানের পণ্য ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
১৪, সিঙ্গারা-পেয়াজুর হোটেল
ভাত খাওয়ার পাশাপাশি মানুষ রোজ ভাজা-পোড়া খেয়ে থাকে।তবে , এ ব্যবসার জন্য আপনাকে প্রথমে একটা উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। আর এ ধরনের হোটেলের জন্য পারফেক্ট জায়গা হলো কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে করা।
১৫, ফাস্ট ফুডের ভ্যান
বর্তমান সময়ে শিশুরা ফাস্ট ফুডের প্রতি একটু বেশি আসক্ত। তাই ভ্যানে করে বিভিন্ন স্কুল, প্রাইমারি সামনে অথবা মাদ্রাসার সামনে থেকে বেশি পরিমাণে বিক্রি করতে পারেন।
১৬, কাঁচামালের ভ্যান
বড় বড় আড়ৎ থেকে পাইকারি দরে কাঁচামাল ক্রয় করে বিভিন্ন মসজিদের সামনে বসতে পারেন। সেখানে ভালো দরে বিক্রি করে আপনি লাভবান হতে পারেন।
১৭, ফেরিওয়ালা
গ্রামে বা শহরে , ছোট কিংবা বড় বেশিরভাগ মেয়েরাই কসমেটিকস আসক্ত। সুতরাং আপনি খুচরাবাজার থেকে ক্রয় করে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতে পারেন।
১৮, ডাবের ভ্যান
সুস্থ বা অসুস্থ সতর্কবান সবাই ডাবের পানি খোঁজে। এবং এটা সাস্থ সম্মত একটি পানীয় খাবার। এক্ষেত্রে আপনি গ্রাম থেকে কম দামে খুচরা ডাব ক্রয় করে শহরে ভ্যানে করে পর্যাপ্ত পরিমাণে লাভবান হতে পারবেন।
১৯, সেন্ডেলের ভ্যান
বড় কোন ফ্যাক্টারী থেকে খুচরা মূল্যে সেন্ডেল ক্রয় করে আপনি ভ্যানে করে বিক্রি করতে পারেন। সচরাচর বাসায় এ ধরনের সেন্ডেলের প্রয়োজন দেখা দেয়।
২০, পান- সুপারির ব্যবসা
দিন দিন মানুষ পান-সুপারির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। আর এ ব্যবসায় লাভের পরিমাণটাও একটু বেশি। এক্ষেত্রে আপনি গ্রাম থেকে এনে বিভিন্ন দোকানেও ছাপ্লাই দিতে পারেন।
২১, কবুতরের ব্যবসা
বর্তমানে মানুষ শখের বশে কবুতর ক্রয় করে। অনেকে আবার খাবার জন্য ও কবুতর খোঁজে। এক্ষেত্রে আপনি বাচ্চা অবস্থায় কিনে কিছুদিন পরে বিক্রি করলে প্রচুর পরিমাণে লাভবান হতে পারবেন।
২২, ঝাল-মুড়ির ব্যবসা
ছোট-বড়, ছেলে-মেয়ে সবাই ঝাল-মুড়ির প্রতি আসক্ত। সুতরাং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এবং বিকেলে বিভিন্ন পার্ক অথবা খেলার মাঠে আপনি ঝাল-মুড়ি নিয়ে বসতে পারেন।
২৩, আতর-টুপির ব্যবসা
বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসার সামনে আপনি এই ব্যবসাটা করতে পারেন। অল্প পুঁজিতে আপনি দ্রুত লাভের মুখ দেখতে পাবেন। বিশেষ করে শুক্রবার দিন এই ব্যবসায় একটু বেশি ভীড় হয়ে থাকে।
২৪,ঝাড়ুর ব্যবসা
ঝাড়ু সব সময় প্রয়োজনীয় একটা বস্তু। যদি নিজে ঘরে বানিয়ে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।তাহলে দ্রুত লাভবান হতে পারবেন।
২৫, হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করা

হস্তশিল্প জিনিস অর্থাৎ হাতে তৈরি জিনিসপত্র সকলেই পছন্দ করে। হস্তশিল্পের প্রতি মানুষের চাহিদা অনেক বেশি। তাই আপনি 10 হাজার টাকায় হস্তশিল্পের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
পাশাপাশি অনলাইনে ও বিক্রি করতে পারেন। কেননা বর্তমান সময়ে অনলাইনের প্রতি মানুষ বেশি ঝুকছে। অনলাইন থেকে কেনাকাটা করতে পছন্দ করে।
অতএব আপনি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করতে পারেন ঘরে বসে।
পরিশেষে বলবো :
উপরে ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যদি বিষয়গুলো আপনি ফলো করেন তাহলে খুব সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
যদি লেখাটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
FAQ
১০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব কি ?
হ্যাঁ , অবশ্যই ১০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব । অনেক লাভ করাও সম্ভব । তাই দেরী না করে আজই এই ব্যবসাটি শুরু করে দিন ।