২০২৪ সালে ব্যবসা নিয়ে শিক্ষনীয় গল্প

আপনি কি  ব্যবসা নিয়ে শিক্ষনীয় গল্প সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এই আর্টিকেলটা আপনার জন্য

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ব্যবসার দিকে ধাবিত হচ্ছে। কারণ, ব্যবসার মাধ্যমে মানুষ খুব সহজে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

ব্যবসা নিয়ে শিক্ষনীয় গল্প

আমরা এমন একজন সফল ব্যবসায়ীর ব্যবসা নিয়ে শিক্ষনীয় গল্প আলোচনা করবো। যার মাধ্যমে আপনি ব্যবসার ক্ষেত্রে শিক্ষা অর্জন করতে পারবেন। চলুন আলোচনার শুরু করা যাক।

ব্যবসা নিয়ে শিক্ষনীয় গল্প

আলী হোসেন আরিফের গল্পটা রূপকথার মতোই। আলী হোসেনের বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের ভরাচর গ্রামে।

পিতার নাম নাছির আহমেদ, মাতা সমুদা খাতুন। পরিবারের ৫ বোন ও ৪ ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়।

তাঁর জন্ম ১৯৮৪ সালে। সততা আর পরিশ্রম যে মানুষকে বিমুখ করে না, এর এক প্রমাণ তিনি। ১৮ বছর আগে এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে মাত্র ৫০ টাকা ধার নিয়ে ঘর ছেড়েছিলেন, আর এখন একজন সফল ফল ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক। কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা তাঁর।

আলী হোসেন এখন বন্দরনগরী চট্টগ্রাম নগরের ‘ফলমুন্ডি’ খ্যাত স্টেশন রোডের প্রথম সারির ফল ব্যবসায়ীদের একজন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স তৈয়বীয়া ফার্ম।

২০০০ সালের ঘটনা। তখন আলী হোসেন পড়ালেখা করতেন পটিয়া উপজেলার সাইদাইর এলাকার একটি মাদ্রাসায়, দশম শ্রেণিতে।

একদিন মাদ্রাসা ছুটি হলে ঘরে ফিরে দেখলেন, পরিবারে আর্থিক অসচ্ছলতার নানা ছাপ। বিষণ্ন মন নিয়ে তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, এই অভাবের সংসারে মা-বাবাকে সাহায্য করতে হবে। কিন্তু পকেটে ছিল না কোনো টাকা।

পাশের ওয়ায়েস করোনি নামের এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে মাত্র পঞ্চাশ টাকা ধার নিয়ে চলে আসেন চট্টগ্রাম শহরে।

সেখানে শাহ আমানত সেতুর উত্তর পাশে একটি ফলের দোকানে চাকরি নেন আলী হোসেন। চাকরিতে সপ্তাহে মজুরি ছিল মাত্র দুই শত টাকা।

সেখানে এক মাস চাকরি করলেন। পরে চট্টগ্রাম নগরেরই অলংকার মোড়ের আরেক দোকানে চাকরি নিলেন। সেখানে বেতন ছিল মাসে তিন হাজার টাকা। ঐ দোকানে আলী হোসেন চাকরি করলেন দীর্ঘ দুই বছর।

তারপর নিজে ঠিক করলেন, আর চাকরি নয়, এবার ব্যবসা করতে হবে। কিন্তু নিজস্ব কোন দোকান দেওয়ার সামর্থ্য তো নেই।

এজন্য ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম শহরে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় আরেকজনের সঙ্গে ভাগে ভাসমান দোকান দেন।

দোকানের প্রাথমিক মূলধন সাড়ে সাত হাজার টাকার পুরোটাই দেন তাঁর সেই অংশীদার। মূলধন না থাকায় কেবল শুধুমাত্র পারিশ্রমিক ছিল আলী হোসেন আরিফের জন্য।

সেখান থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাঁকে। মাত্র সাত বছরের ব্যবধানে ২০১০ সালের মধ্যেই বহদ্দারহাট এলাকায় আলী হোসেনের মালিকানাধীন হয়ে যায় ১১টি ফলের দোকান। একেকটি দোকানের মূলধন ছিল প্রায় ৮০ হাজার টাকার মতো।

এরপর আলী হোসেনের ব্যবসার পরিসর আরও বাড়তে থাকে। তখন শহরের স্টেশন রোডে ১০ লাখ টাকা জামানত দিয়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়েছিলেন ২০১০ সালেই।

তারপর ভাগ্যের চাকা ঘুরে এক বছর পরে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা দিয়ে সেই দোকান কিনে নেন।

এখন তাঁর দোকানের সংখ্যা আরও বেড়েছে। ভাইয়েরা তাঁকে সহায়তা করেন। নগরের বহদ্দারহাটেও আরেকটি দোকান ক্রয় করেছেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৬০০ কার্টন ভর্তি বিভিন্ন ফল খালাস হয়, যার মূল্য আনুমানিক ৭০ লাখ টাকা।

এগুলো আলী হোসেনের দোকানে আসার পর গাড়িতে করে ঢাকা, গাজীপুর, ফেনী, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে নিয়ে যান।

তার সফল ব্যবসার কিছু উপাদান হলো- তিনি সময়মতো সরকারের কর পরিশোধ করে দিতেন। আর দোকানের কর্মচারীদের মূল্যায়ন করতেন বেশি করে । কারণ, কর্মচারীদের হাত ধরেই তাঁর ব্যবসায়িক সফলতা।’

পরিশেষে তার ব্যবসার গল্প থেকে যে শারনির্যাস বের হয়ে আসে তা হলো- ‘মেধা ও সততার পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করলে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না।’

সুতরাং আপনিও তার ব্যবসায়িক এই জীবনের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

পরিশেষে বলবো :

উপরে ব্যবসা নিয়ে শিক্ষনীয় গল্প সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যদি লেখাটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন : ১০০০ টাকায় ব্যবসা করার দারুণ ১০টি আইডিয়া, প্রতিমাসে ৩৫০০০ টাকা আয়

I always like to learn and spread new things. So my main aim is to bring up new topics related to all types of business ideas.

Leave a Comment