আপনি কি ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে কোন তথ্য খুঁজতেছেন ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।
ব্যক্তিগত প্রয়োজন অথবা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আমরা লেনদেন করে থাকি। আর এসব লেনদেনের ক্ষেত্রে চুক্তি করা প্রয়োজন পড়ে।
যাতে করে ভবিষ্যতে নানান ধরনের ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকা যায়। কিন্তু কিভাবে সঠিকভাবে চুক্তি করতে হয় এটা আমরা অনেকেই জানিনা।
এজন্য আমাদের নানার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
যাতে করে আপনি কোন প্রবলেমের মুখামুখি না হন। এ জন্য সমস্ত আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে ।
ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম 2025
এখন কিভাবে সঠিক উপায়ে চুক্তি করতে হয় এ নিয়ে আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। যাতে করে আপনি উপকৃত হন।
১. শিরোনাম ও চুক্তিপত্রের বিবরণ উল্লেখ করুন :
- চুক্তিপত্রের শিরোনাম উল্লেখ করুন । যেমন: ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র অথবা অংশীদারিত্ব চুক্তিপত্র উল্লেখ করুন।
- চুক্তি কখন শুরু হচ্ছে ও কতদিনের জন্য প্রযোজ্য তা প্রথমেই উল্লেখ করুন। যেমন: এই চুক্তি [তারিখ] তারিখে কার্যকর হবে এবং [সময়সীমা] পর্যন্ত প্রযোজ্য থাকবে।
২. চুক্তির উদ্দেশ্য উল্লেখ করুন :
চুক্তির মূল উদ্দেশ্য সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে। এটি চুক্তির বিষয়বস্তু বুঝতে সাহায্য করে।
যেমন: এই চুক্তির অধীনে উভয় পক্ষ [চুক্তির উদ্দেশ্য] প্রাপ্তির জন্য একমত।
৩.চুক্তির পক্ষসমূহ উল্লেখ করুন :
যারা এই চুক্তির অংশীদার হবেন তাদের নাম, ঠিকানা এবং পরিচয়পত্র সংক্রান্ত তথ্য লিখুন।
যেমন: এই চুক্তিতে একদিকে প্রথম পক্ষ হিসেবে [প্রথম পক্ষের নাম] এবং অন্যদিকে দ্বিতীয় পক্ষ হিসেবে [দ্বিতীয় পক্ষের নাম] উল্লেখ করুন ।
৪. পক্ষসমূহের দায়িত্ব ও কর্তব্য উল্লেখ করুন :
চুক্তির পক্ষগুলো কী কী কাজ সম্পন্ন করবে এবং কী কী দায়িত্ব পালন করবে, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন।
উদাহরণস্বরূপ: প্রথম পক্ষের দায়িত্ব হবে পণ্যের সরবরাহ এবং দ্বিতীয় পক্ষের দায়িত্ব হবে তা বিপণন করা।
৫. অর্থনৈতিক শর্তাবলী উল্লেখ করুন :
অর্থ প্রদান বা বিনিয়োগের শর্তাবলী এবং পদ্ধতি, পেমেন্টের সময়সীমা ইত্যাদি বিস্তারিত উল্লেখ করুন।
যেমন: প্রতি মাসে [টাকার পরিমাণ] প্রদান করা হবে বা লভ্যাংশ [লভ্যাংশের পরিমাণ] হিসাবে বিতরণ করা হবে।
৬. গোপনীয়তা ও তথ্য সংরক্ষণ করুন :
চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত তথ্য এবং ব্যবসায়িক গোপনীয়তা রক্ষার শর্তাবলী উল্লেখ করুন।
যেমন: চুক্তির অংশীদাররা চুক্তির তথ্য অন্য কারও কাছে প্রকাশ করতে পারবেন না।
৭. চুক্তি বাতিলের শর্তাবলী উল্লেখ করুন :
কোন পরিস্থিতিতে এবং কীভাবে চুক্তি বাতিল করা যাবে, তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন।
উদাহরণ: চুক্তির যে কোনো পক্ষ পূর্বে ৩০ দিনের নোটিশ প্রদান করে তাহলে চুক্তি বাতিল করতে পারে।
৮. আইনি প্রক্রিয়া উল্লেখ করুন :
আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য কোন দেশের আইন এবং আদালত কার্যকর হবে তা উল্লেখ করতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ: এই চুক্তির আওতায় কোনো বিরোধ হলে [দেশের নাম]-এর আইন অনুযায়ী সমাধান করা হবে।
৯. স্বাক্ষর ও তারিখ উল্লেখ করুন :
চুক্তিপত্রের শেষে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর স্বাক্ষর এবং তারিখ যুক্ত করুন । এতে চুক্তির বৈধতা এবং সঠিকতা নিশ্চিত হবে।
১০. পরিবর্তন এবং সংশোধন উল্লেখ করুন :
- চুক্তির কোনো শর্ত পরিবর্তন বা সংশোধনের প্রয়োজন হলে কীভাবে সেটি করা যাবে, তা উল্লেখ করুন।
- পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের লিখিত সম্মতির প্রয়োজন হবে বলে উল্লেখ করতে পারেন, যা ভবিষ্যতে যেকোনো বিতর্ক এড়াতে সহায়ক হবে।
পরিশেষে বলবো :
উপরে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যদি বিষয়গুলো আপনি ফলো করেন তাহলে খুব সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
যদি লেখাটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।