আপনি তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল এ সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।
তাহাজ্জুদের নামাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি নামাজ। এই নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।
হাদিসে এই নামাজের প্রতি অনেক গুরত্ব দেওয়া হয়েছে । তাহলে তে বুঝতেই পারছেন এ নামাজের কত গুরত্ব ?
তবে বর্তমান সময়ে এই নামাজ নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। কেউ বলছেন তাহাজ্জুতের নামাজ সুন্নত আবার কেউ বলছেন তাহাজ্জুতের নামাজ নফল।
মতানৈক্য ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের মাঝে । নানা রকম ফেতনা – ফাসাদ হচ্ছে । তাই সবাই এই সমস্যার সমাধান খুজছে ।

আজ আমি আপনাদের কথা ভেবে তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল এ ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব।
পাশাপাশি দলিল-আদিল্লা নিয়ে আলোচনা করব। যাতে করে কোনো ধরনের সংশয় না থাকে।
খুব সহজে ভালো একটি সমাধান পান । তাই অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল ?
এই নামাযটি নফল না সুন্নত এই প্রশ্নটির উত্তর জানার আগে আমাদের একটি ভূমিকা জানতে হবে। তাহলে আপনাদের উত্তরটি বুঝতে সহজ হবে।
তাই আগে একটি ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করব। এরপর প্রশ্নটির উত্তর দিব । যাতে করে কোন ধরনের সন্দেহ না থাকে । তাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন ।
সুন্নাত কত প্রকার ?
আমাদের আগে জানতে হবে সুন্নাত সম্পর্কে । তাহলে সমস্ত প্রশ্নের পেয়ে যাব ।
সুন্নত দুই প্রকার :
১. সুন্নতে মুয়াক্কাদা : এই সুন্নতের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ছেড়ে দিলে গুনা হবে। যেমন :
- ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত রয়েছে।
- যোহরের আগে চার রাকাত এবং যোহরের পরে দুই রাকাত।
- মাগরিবের পরে 2 রাকাত।
- এশারের পর দুই রাকাত।
এসমস্ত নামাজ হলো সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। এগুলো ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে।
২. সুন্নতে গাইরে মুয়াক্কাদা : যদি এই সুন্নাত গুলো আদায় করা হয় তাহলে সওয়াব হবে। আর যদি ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে গুনা হবে না। এই প্রকারের সুন্নত গুলোকে নফল ও বলা হয়। যেমন :
- আসরের আগে চার রাকাত সুন্নত।
- তাহাজ্জুদের নামাজ।
- ইশরাকের নামাজ।
- চাশতের নামাজ। ইত্যাদি।
তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল এ সম্পর্কে বিস্তারিত উত্তর
তাহাজ্জুদের নামাজ হলো সুন্নতে গাইরে মুয়াক্কাদা। তাই একে নফল ও বলা যায়। আমাদের নবী হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম থেকে চার রাকাত , ৬ রাকাত , ৮ রাকাত, ১০ রাকাত ইত্যাদি প্রমাণিত।
তবে আপনি কম ও পড়তে পারবেন আবার বেশি ও পড়তে পারবেন । কারণ এটা নফল তাই আপনার ইচ্ছামত পড়তে পারবেন। তবে সবচেয়ে উত্তম হল ৮ রাকাত পড়া। আশাকরি আপনার প্রশ্ন তথা তাহাজ্জুদ নামাজ কি সুন্নত না নফল এর উত্তর পেয়ে গেছেন ।
Read more : তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও সময়: সঠিক উপায়ে বিস্তারিতভাবে জানুন !
তাহাজ্জুদের নামাজ সুন্নত হওয়ার দলিল :
হযরত আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা কে জিজ্ঞাসা করে বলেন :
আমাদের নবী হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রমজানের নামাজ কেমন হতো ? হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা উত্তরে বললেন:
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান এবং রমজানের বাহিরে 11 রাকাতের বেশি নামাজ পড়তেন না। প্রথমে ৪ রাকাত নামাজ পড়তেন। যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না ।
এরপর আরও চার রাকাত নামাজ পড়তেন। যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাই বাহুল্য । এরপর ৩ রাকাত নামাজ পড়তেন। (বুখারী শরীফ ১/১৫৪) , (মুসলিম শরীফ ১/২৫৪) , (নাসাঈ শরীফ ১/২৪৮)
উল্লেখিত হাদীস দ্বারা এটাই বুঝা যায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আট রাকাত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন।
পরিশেষে বলব : তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। আশা করি আপনি আপনার উত্তর পেয়ে গিয়েছেন।
যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন । আরো কোন প্রশ্ন জানার থাকলে প্রশ্ন করবেন।ধন্যবাদ।