আপনি কি বিমানের টিকিট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে কোন তথ্য খুঁজতেছেন ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য ।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও বর্তমান সময়ে বিমানের গ্রাহক বা যাত্রী বেড়েই চলেছে।
সুতরাং ব্যাপক চাহিদাপূর্ণ এই বিমানের টিকিট ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক এবং সম্ভাবনাময় ব্যবসা হতে পারে।
তবে বিমানের টিকিট ব্যবসা করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু বিষয় জানতে হবে এবং বুঝতে হবে।
তাই আজ আমি বিমানের টিকিট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য কি কি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।
যাতে করে আপনি কোন প্রবলেমের মুখামুখি না হন। এ জন্য সমস্ত আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে ।
বিমানের টিকিট ব্যবসা করার নিয়ম 2025
আমাদের আর্টিকেলে আমরা বিমানের টিকিট ব্যবসা করার জন্য কি কি নিয়ম ফলো করতে হবে এ নিয়ে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে আপনাদের ব্যবসার সহায়তা করবো।
প্রথমত বিমানের টিকিট ব্যবসা করতে হলে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় সব বিষয় নিচে দেয়া হল।
১, লাইসেন্স ও অনুমতি:
বিমানের টিকিট ব্যবসা করা যেহেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান একটি কাজ। সুতরাং এই ব্যবসা করতে হলে আপনাকে খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
যেমন – প্রথমে আপনাকে আপনার দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের থেকে একটি লাইসেন্স ও অনুমতি নিতে হবে। এবং তাদের দেওয়া বিধি নিষেধ গুলো খুব ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
২, অফিসের স্থান:
আপনার বিমানের টিকিট ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট অফিসের প্রয়োজন হবে। যে অফিসটিতে গ্রাহকরা আপনার সাথে বারবার দেখা করতে আসবে এবং বিমানের টিকিট বুকিং করতে আসবে।
সুতরাং আপনাকে বিমানের টিকিট ব্যবসার জন্য একটি উপযুক্ত অফিসের স্থান নির্বাচন করতে হবে।
এক্ষেত্রে অফিসটি বিমানবন্দরের আশেপাশে হতে পারে আবার অন্য কোথাও হতে পারে। তবে গ্রাহকদের যাতায়াতের সুবিধা অনুযায়ী আপনাকে স্থানটি নির্বাচন করতে হবে।
৩, কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার:
বর্তমান সময়ে যেহেতু আধুনিকতার যুগ। এজন্য বাস, ট্রেন এবং বিমানের টিকিট বুকিং করতে হয় অনলাইনের মাধ্যমে।
সুতরাং আপনার বিমানের টিকিট ব্যবসা করতে হলে একটি ভালো মানের কম্পিউটারের প্রয়োজন হয় যার মাধ্যমে আপনি গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ এবং তাদের টিকেট বুকিং করতে পারবেন। পাশাপাশি বিমানের টিকিট বুকিং করার জন্য নির্দিষ্ট একটি সফটওয়্যার এর প্রয়োজন হবে।
৪, ব্যাংক একাউন্ট:
যেহেতু বিমানের টিকিট এর মূল্য তুলনামূলক একটু বেশি হয়। এজন্য টিকেট মূল্য সরাসরি নগদ টাকা না নিয়ে বরং সবাই ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করে থাকে।
এজন্য আপনারও লেনদেন করার জন্য একটি নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে।
৫, বীমা:
আপনার বিমানের টিকিট ব্যবসা গ্রাহকদের সুবিধার জন্য এবং আপনার অর্থকে সুরক্ষার জন্য একটি বীমা করতে পারেন।
বিমানের টিকিট ব্যবসা করার নিয়মের বিভিন্ন পদ্ধতি
এখন আমরা বিমানের টিকিট ব্যবসা করার বিভিন্ন পদ্ধতি এবং নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিবো।
১, জিএসএ বা এজেন্ট হিসেবে কাজ করা:
আপনি কোন নির্দিষ্ট একটি বিমান সংস্থার সাথে মিলে তাদের জেনারেল সেলস এজেন্ট ( জিএসএ) বা তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে শুধুমাত্র তাদের বিমান টিকিট বিক্রি করা।
২, বিমান টিকিট এজেন্সি :
বিমানের টিকিট বিক্রি ব্যবসার দ্বিতীয় আরো একটি পদ্ধতি হল বিমান টিকিট বিক্রির এজেন্সি ট্রাভেল খোলা।
এখানে আপনি শুধুমাত্র একটি বিমান সংস্থার টিকিট নয় বরং একাধিক বিমান সংস্থার টিকিট বিক্রি করতে পারবেন।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন বিমান সংস্থার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তাদের ট্রাভেল ভাই এজেন্সি ক্রয় করতে হবে।
৩, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি:
আধুনিকতার যুগে মানুষদের ব্যবসা থেকে শুরু করে কেনাকাটা এবং সবকিছুই অনলাইন ঘিরে গড়ে উঠেছে।
সুতরাং আপনিও অনলাইনে একটি ট্রাভেল এজেন্সি খুলতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার একটি ফেসবুক পেইজ অথবা একটি ওয়েবসাইট খুলতে হবে।
বিমানের টিকিট ব্যবসা করার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে:
- উচ্চ মুনাফা : বিমানের টিকিটের মূল্য যেহেতু পরিমাণে অনেক বেশি। সুতরাং তার থেকে মুনাফা লাভের পরিমাণটাও বেশি পাওয়া যায়।
- চাহিদা সম্পন্ন ব্যবসা : বিমানের টিকিটের চাহিদা সারা বছর জুড়ে থাকে। আমাদের দেশ থেকে মানুষ বিভিন্ন কাজে যেমন অফিসিয়াল কাজে অথবা ভ্রমণে ইত্যাদি কাজে তারা প্রায় বিদেশে গমন করে থাকে।
আরো পড়ুন :
- বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা : ১৬টি আনকমন ব্যবসার আইডিয়া ।
- বাচ্চাদের পোশাকের ব্যবসা আইডিয়া: প্রতিমাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় ।
বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সি
বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সিগুলি হল সেগুলি, যারা বৈধভাবে পর্যটন ও ভ্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে।
- জামান এয়ার ইন্টারন্যাশনাল
- সৌহার্দ্য ট্রাভেলস
- বিমান ট্রাভেলস
- ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অ্যান্ড ট্রাভেলস
- গ্রীণ লাইন ট্রাভেলস
- ইউনিক ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলস
- সান ওয়ে ট্রাভেল এজেন্সি
- আকাশ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস
- নিশান ট্রাভেলস
- ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস লিমিটেড
- সারাভি ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস
- ডেল্টা ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস
- আলফা ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস
এই সমস্ত কোম্পানি নামকরা কোম্পানি । ব্যবসা করার জন্য এই কোম্পানিগুলোকে ফলো করতে পারেন ।
বিমানের টিকেট কাটার এপস
- Biman Bangladesh Airlines (বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস) । বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিজস্ব অ্যাপ রয়েছে, যা ব্যবহার করে যাত্রীরা সরাসরি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট টিকেট বুক করতে পারেন। অ্যাপটি ব্যবহার করে টিকেট বুকিং, সময়সূচী চেক করা, চেক-ইন, এবং অন্যান্য সেবা সহজে পাওয়া যায়।
- ShareTrip (শেয়ারট্রিপ) ShareTrip বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ট্রাভেল বুকিং অ্যাপ। এটি বিমান টিকেট, হোটেল বুকিং, এবং ট্রাভেল প্যাকেজ বুক করতে সহায়ক।
- Go Zayaan (গো যায়ান) Go Zayaan একটি জনপ্রিয় স্থানীয় ট্রাভেল বুকিং অ্যাপ । যা বিমানের টিকেট, হোটেল বুকিং এবং ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের সুবিধা দেয়।
- Flight Expert (ফ্লাইট এক্সপার্ট) Flight Expert একটি ট্রাভেল এজেন্সি এবং অ্যাপ । যা আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য টিকেট বুক করতে সহায়ক।
- TripMaker (ট্রিপমেকার) TripMaker অ্যাপটি বাংলাদেশে ট্রাভেল বুকিং সেবার জন্য জনপ্রিয়। এটি বিমান টিকেট এবং হোটেল বুকিংয়ের সুবিধা দেয়।
- NovoAir (নভোএয়ার) NovoAir বাংলাদেশী একটি অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইন এবং তাদের নিজস্ব একটি অ্যাপ রয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীরা তাদের ফ্লাইট বুক করতে পারেন, সময়সূচী দেখতে পারেন, এবং অন্যান্য সেবা পেতে পারেন।
- US-Bangla Airlines (ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস) US-Bangla Airlines বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি এয়ারলাইন। তাদের নিজস্ব অ্যাপ রয়েছে, যা ব্যবহার করে টিকেট বুকিং করা যায়।
এই সমস্ত এপস নামকরা এপস । ব্যবসা করার জন্য এই এপসগুলোকে ফলো করতে পারেন ।
পরিশেষে বলবো :
উপরে বিমানের টিকিট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যদি বিষয়গুলো আপনি ফলো করেন তাহলে খুব সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
যদি লেখাটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।